ঢালিউডের আলোচিত দুই চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলী, দুজনেই ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের সাবেক স্ত্রী। এই দুই নায়িকার মধ্যে যে দা-কুমড়া সম্পর্ক, প্রায়ই পরস্পরের প্রতি তির্যক মন্তব্যে প্রকাশ পায়।
সম্প্রতি পরিচালক মোহাম্মদ ইকবালের ‘বিট্রে’ সিনেমা থেকে বাদ পড়া ও সরে যাওয়া নিয়ে অপু-বুবলী মেতেছেন কথার যুদ্ধে। বুবলী জানিয়েছেন, শাকিব খানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার কারণেই পরিচালক মোহাম্মদ ইকবালের সিনেমা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
এমন বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর মুখ খুলেছেন অপু। বলেন, নিজে সিনেমা থেকে বাদ পড়ে শাকিবকে দেয়াল হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছেন তিনি। দুর্বল গেমপ্ল্যান। সিনেমা থেকে বাদ না পড়লে, শাকিবের প্রতি দরদ দেখানো এমন কোনো বাক্য ব্যবহার করতেন না। আসলে সবখানে শাকিব খানের নাম মুখে নিয়ে উনি ক্লান্ত হয়ে গেছেন।
এবার অপুর কথা জবাবে তাকে ইঙ্গিত করে বুবলী জানালেন, বুবলী নাম নিতে নিতে উনি মানসিক রোগী হয়ে গেছেন! শুধু তাই নয়, অপুকে ‘ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা’ সঙ্গেও তুলনা করেছেন। প্রকাশ্যে এনেছেন নানা গোপন কথাও!
বুবলী বলেন, সব থেকে হাস্যকর হলো, উনি নিজের নিঃশ্বাসের থেকেও বুবলী নামটা বেশি নেন। সব জায়গায় শুধু বুবলী, বুবলী আর বুবলী। ভাইরাল হওয়ার জন্য তিনি এমন কিছু নেই, যা করছেন না। বুবলী নাম নিতে নিতে উনি মানসিক রোগী হয়ে গেছেন।
বুবলী আরও বলেন, শাকিব আমার পরিবার। আমি সবসময় তার নাম নিয়েছি এবং সারাজীবন নেব। পরিবারের সদস্যের নাম নিতে কেউ কখনো ক্লান্ত হয় না। তবে যাদের স্বার্থ থাকে তারা ক্লান্ত হন। আর যে মহিলা (অপু বিশ্বাস) এসব বলছে, সে কে? যিনি ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতো সবসময় আমাদের মাঝখানে তিড়িং-বিড়িং করেন। সারাক্ষণ নিজের মতো বানানো মিথ্যা রচনা বলেন। এখন তার ক্যারিয়ারে আলোচনায় থাকার একমাত্র বিষয় আমি ও আমার ছেলে। জাতীয় টেলিভিশনে কী সব উদাহরণ দিচ্ছে, যার কোনো অর্থই নেই। কি কি সব নোংরা আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করছে, যা খুবই লজ্জাজনক। তার মুখে সবসময় দুর্গন্ধজনক শব্দগুলো থাকে, কারণ তার ভেতরটাও এ রকম।
কিছুদিন আগে অপু বিশ্বাস দাবি করেন, শাকিব খানের শত্রুদের সঙ্গে বুবলীর ওঠাবসা বেশি। এ প্রসঙ্গে বুবলী বলেন, ২০০৮ সালে শাকিব অসুস্থ হলে সঙ্গে সঙ্গে দৌড় দিয়ে অন্য জায়গায় সিনেমায় সাইন করেছিলেন তিনি। আবার যে নায়কের সঙ্গে সিনেমা সাইন করে, তার মৃত্যুর পরই জানাজা শেষ হতে না হতেই পরিচালকদের অন্য নায়ক খুঁজতে বলায় ৫/৬টি সিনেমা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল এই মহিলাকে। আবার নিজ স্বার্থের জন্য শাকিবের কাছে ভিড়েছিল। সবই ইন্ডাস্ট্রির মানুষজন জানেন। জয়া আপু, বিদ্যা সিনহা মিম, ফারুক ভাই, কাজী হায়াত আঙ্কেল থেকে শুরু করে অনেক তারকার সঙ্গেই বিএফডিসিতে বেয়াদবি করেছিলেন তিনি, যা নিউজেও এসেছে। আর বেয়াদবির জন্য তিনি মারও খেয়েছেন।
এই চিত্রনায়িকা আরও বলেন, ২০১৭ সাল থেকে শাকিব ও তার পরিবার নিয়ে কী অপমানজনক কথা বলেছিলেন উনি, সে সবই ভিডিওতে আছে। কোন নায়কের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরেছে, সেই কথাও আছে। অন্য নায়কের সঙ্গে যখন ফের প্রেমের গুঞ্জন উঠল, যখন ওই নায়কের সঙ্গে ওখানে কিছুদিন পর আর বনিবনা হলো না, তখন বলে যে এমন প্রেম প্রেম কথা নাকি ইচ্ছা করে উঠিয়েছেন। ২০১৭ সালে বিএফডিসিতে শাকিব খানের সঙ্গে যখন সমস্যা হয়েছিল, তখন তার বিরুদ্ধে ছিল অপু বিশ্বাস। এমন অনেকের সঙ্গে সেলফিতে দেখা গেছে তাকে। কয়দিন আগেও দেশের বাইরে গিয়ে খোলামেলা শুট করে এসেছে। কিছুদিন আগে মুক্তি পাওয়া সিনেমার গানেও অশ্লীল ড্রেসে দেখা গেছে। অথচ অন্য নায়িকাদের বলেন, কখনো নাকি অশ্লীল ড্রেস পরেননি তিনি।
ইকবালের প্রসঙ্গ টেনে এই নায়িকা বলেন, উনি (অপু বিশ্বাস) নাকি ইকবাল ভাইয়ের ছায়াও দেখেন না। কিন্তু কেন? কারণ হচ্ছে, কিছুদিন আগে ইকবাল ভাইয়ের কাছের একজন প্রযোজক অনুদানের একটি সিনেমা থেকে বাদ দিয়েছিলেন তাকে। আবার সাইনিং মানিও ফেরত নিয়েছিলেন। সেলিম ভাই বা ইকবাল ভাই যখন সিনেমায় আমাকে চুক্তিবদ্ধ করেছিলেন, আমার কাজের অনেক প্রশংসা করেছিলেন। তখন তাকে নিয়ে সিনেমা বানাচ্ছিলেন না, বানালে ঠিকই করতেন। এ ধরনের কোনো উদাহরণ আছে, তার কাছে উনারা সিনেমা নিয়ে গেছেন অথচ ফিরিয়ে দিয়েছেন উনি। কিন্তু এখানে চালাকি করে শাকিবের নামের ওপর দিয়ে চালিয়ে দিলো। কাকে কি বোঝায় উনি? হাস্যকর।
অপুকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বুবলী বলেন, সে ভেবেছে আমাকে ও আমার ছেলেকে নিয়ে সব সময় মিথ্যাচার করবে; আর আমিও বরাবরের মতো চুপ থাকব। কখনোই না। কেননা, আমার কখনোই তাকে নিয়ে কথা বলার রুচি হয় না। তবে যখন দেখছি সে তার নিজ স্বার্থসিদ্ধির জন্য আদাজল খেয়ে শেহজাদকে তার বাবার থেকে আলাদা করার জন্য নেমেছে, তখন আমি চুপ থাকব কেন? সে এসব নিয়ে সারাক্ষণ বাজে “গেম প্ল্যান” করে বলেই এই “গেম প্ল্যান” শব্দ তার মুখ থেকে এসেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০২৪
এনএটি