ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ পৌষ ১৪৩১, ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬ রজব ১৪৪৬

বিনোদন

সংকটাপন্ন প্রবীর মিত্র, সরকারের সহযোগিতা চায় পরিবার

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২৫
সংকটাপন্ন প্রবীর মিত্র, সরকারের সহযোগিতা চায় পরিবার প্রবীর মিত্র

বেশ ক’বছর ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন সিনেমার দাপুটে অভিনেতা প্রবীর মিত্র। তার শারীরিক অবস্থা ভালো নেই।

শরীরে অক্সিজেন স্বল্পতাসহ বেশ কিছু কারণে গেল ২২ ডিসেম্বর এই অভিনেতাকে ভর্তি করা হয় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে। নেওয়া হয় হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। গণমাধ্যমকে খবরটি জানিয়েছেন প্রবীর মিত্রের ছোট ছেলে সিফাত ইসলাম।

তিনি বলেন, বাবার শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। বয়সজনিত কিছু শারীরিক জটিলতায় ২২ ডিসেম্বর বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। তার শরীরে অক্সিজেন পাচ্ছিল না। এরপর তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখান থেকে কেবিনে দেওয়া হয়েছিল। এখন আবার তাকে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রাখা হয়েছে। তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। খারাপ অবস্থার দিকে যাচ্ছে। তার ব্লাড লস হচ্ছে, প্লাটিলেটও কমে যাচ্ছে।

প্রবীণ এই অভিনেতার উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের সহায়তা চান তার পরিবারের সদস্যরা। সিফাত বলেন, সরকার থেকে শিল্পী সমিতি- আমরা কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। সমিতির মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছি, কিন্তু সমিতির কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি।

তিনি যোগ করে বলেন, আমরা চাই, বিষয়টি রাষ্ট্র দেখুক। তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করুক। মেডিকেল বোর্ড গঠন করার সুযোগ থাকলে তা হোক। এই চলচ্চিত্রের জন্য উনি অনেক দিয়েছেন। আমরা চাই, জীবিত থাকা অবস্থায় তিনি সেই সম্মানটা পান।

উল্লেখ্য, অনেকে ঢাকাই সিনেমার ‘রঙিন নবাব’ বলে ডাকেন প্রবীর মিত্রকে। ১৯৪০ সালের ১৮ আগস্ট চাঁদপুর জেলার নতুন বাজারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। প্রবীর মিত্রের শৈশব কেটেছে পুরান ঢাকায়। পড়াশোনা করেন সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল ও জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)।  

১৯৭১ সালে এইচ আকবরের ‘জলছবি’ সিনেমা দিয়ে বড়পর্দায় যাত্রা শুরু করেন প্রবীর মিত্র। এরপর দীর্ঘ ক্যারিয়ারে পর্দায় নায়ক চরিত্রে যেমন সফল হয়েছেন, তেমনি চরিত্রাভিনেতা হিসেবেও সমানভাবে আলো ছড়িয়েছেন তিনি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রায় তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন গুণী এই অভিনেতা।  

‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’-এর মতো সিনেমায় নায়কের ভূমিকায় দেখা গেছে প্রবীর মিত্রকে। এছাড়া ‘রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ সিনেমায় মূখ্য চরিত্রে ছিলেন তিনি। তার অভিনীত অনান্য উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হচ্ছে- ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সীমার’, ‘তীর ভাঙা ঢেউ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘অঙ্গার’, ‘পুত্রবধূ’, ‘নয়নের আলো’, ‘চাষীর মেয়ে’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘আবদার’, ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়ান’, ইত্যাদি।

কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ১৯৮২ সালে মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান প্রবীর মিত্র। আর ২০১৮ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।  

ব্যক্তি জীবনে তার তিন ছেলে, এক মেয়ে। স্ত্রী অজন্তা মিত্রকে ২০০০ সালে হারানোর পর ২০১২ সালে তার ছোট ছেলে আকাশও পরপারে পাড়ি জমান।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২৪
এনএটি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।