ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

ডিলান নোবেল পাওয়ায় প্রমাণিত হলো সংগীতও সাহিত্য

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৬
ডিলান নোবেল পাওয়ায় প্রমাণিত হলো সংগীতও সাহিত্য বব ডিলান

সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার খবর বের হওয়ার পর থেকে সারাবিশ্বের বিভিন্ন অঙ্গনের মানুষদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন বর্ষীয়ান মার্কিন সংগীতশিল্পী বব ডিলান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন ৭৫ বছর বয়সী এই তারকার বন্দনা।

এবারই প্রথম কোনো গীতিকার এই পুরস্কার জিতলেন। সবশেষ ১৯৯৩ সালে মার্কিন হিসেবে কথাশিল্পী টনি মরিসন নোবেল জেতেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা মনে করেন, এই সম্মান তার প্রাপ্য ছিলো। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘আমার প্রিয় কবিদের মধ্যে একজন তিনি, তাকে অভিনন্দন। ’

লেখক স্যার সালমান রুশদিও ডিলান জেতায় নোবেল কমিটির প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, ‘অর্ফিয়াস থেকে ফাইজ, গান ও কবিতা একটার সঙ্গে অারেকটা অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। চারণ কবিদের সংগীতরীতি বা জীবনযাত্রা সম্পর্কিত ঐতিহ্যের উজ্জ্বল উত্তরাধিকারী ডিলান। ’

ভারতের গুণী সংগীতশিল্পীদের অনেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ডিলানকে। গানের মানুষ হিসেবে তিনি এ পুরস্কার জেতায় গর্বিত সবাই। তারা মনে করেন, এই অর্জন সারাবিশ্বের সব সংগীতশিল্পীর জন্যই গর্বের ব্যাপার।

গীতিকার জাভেদ আখতার মনে করেন, ডিলানকে সাহিত্যে নোবেল দেওয়ার মধ্য দিয়ে অবিশ্বাস্য এবং আশ্চর্যজনক সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্টকহোমের সুইডিশ অ্যাকাডেমি। সংগীতও যে সাহিত্যের অংশ এতে তা প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘গানকে সচরাচর সাহিত্য হিসেবে ধরা হয় না। বব ডিলান সে ধারণায় পরিবর্তন আনতে দারুণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি দুর্দান্ত একজন শিল্পী। ’

অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রাহমান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন প্রজন্মকে গানে গানে প্রভাবিত করার জন্য বব ডিলানকে ধন্যবাদ জানাই। মানুষকে তাদের ম্যাড়ম্যাড়ে জীবনযাপন থেকে সরিয়ে অন্য এক পৃথিবীতে নিয়ে গেছেন তিনি। সাহিত্যে তার নোবেল জয় আমরা উদযাপন করছি। ’

সরোদ শিল্পী আমজাদ আলি খানের মতে, বব ডিলানের নোবেল পুরস্কার প্রাপ্য ছিলো। তিনি বলেন, ‘শ্রোতাদের ভালো গান ও সুখকর মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন ডিলান। যে কোনো দেশের শিল্পীর গানের সঙ্গে শ্রোতারা নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারে, এটাই সংগীতের সৌন্দর্য। এর কারণ আমরা সাতসুরেই গান করি। ’

আমেরিকান সংগীত ঐতিহ্যে নতুনধারার কাব্যিক অভিব্যক্তি প্রবর্তনের স্বীকৃতিস্বরূপ নোবেল পেলেন বব ডিলান। তার বিখ্যাত গানের তালিকায় রয়েছে ‘ব্লোইং ইন দ্য উইন্ড’, ‘মিস্টার ট্যাম্বুরিন ম্যান’, ‘লাইক অ্যা রোলিং স্টোন’, ‘অ্যা হার্ড রেইনস অ্যা-গনা ফল’ ইত্যাদি।

এ খবরে উচ্ছ্বসিত গায়িকা ঊষা উত্থুপ। এ ছাড়া গায়ক আদনান সামি, সংগীত পরিচালক-গায়ক বিশাল দাড়লানি, গায়িকা শিল্পা রাও অভিনন্দনে জানিয়েছেন, ডিলানের গানই তাদের সংগীতের আদল গড়তে সহায়ক হয়েছে। অভিনন্দন জানিয়েছেন অভিনেতা ঋষি কাপুর, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, কুনাল কোহলি, নির্মাতা সুধীর মিশ্র।

আগামী ১০ ডিসেম্বর বাকি পাঁচ বিজয়ীর পাশাপাশি বব ডিলানের হাতে নোবেল পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। ১৯৮৬ সালের এই দিনে মারা যান এ স্বীকৃতির প্রবর্তক আলফ্রেড নোবেল।

১৯৭১ সালের ১ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’-এ গিটার আর হারমোনিকা হাতে সংগীত পরিবেশন করেন বব ডিলান। বিখ্যাত ব্যান্ড বিটলসের সংগীতশিল্পী জর্জ হ্যারিসনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের বন্ধু।

বাংলাদেশ সময় : ২১৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৬
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।