ঢাকা, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

বিনোদন

অর্থাভাবে নির্মাতার চিকিৎসা বন্ধ!

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২২
অর্থাভাবে নির্মাতার চিকিৎসা বন্ধ! শহীদুল হক খান

‘ছুটির ফাঁদে’, ‘কলমিলতা’, ‘সুখের সন্ধানে’র মতো সিনেমার নির্মাতা, গীতিকার ও নাট্যকার শহীদুল হক খান। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এই নির্মাতা ভালো নেই।

দীর্ঘ ৪ বছর ধরে তিনি লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত। ইতোমধ্যেই দুই বার দিল্লির স্যার গঙ্গারাম হাসপাতালে অপারেশন করিয়ে এসেছেন।

তার চিকিৎসায় ইতোমধ্যেই প্রায় ৭০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তিনি বর্তমানে চিকিৎসকদের পরামর্শে ওরাল কেমোসহ বিভিন্ন মেডিসিন নিচ্ছেন। তার শারীরিক অবস্থা এখন খুবই খারাপ। লিভারের জটিলতার কারণে অ্যালভোমিনে ঘাটতি হচ্ছে। স্যালাইনের মাধ্যমে অ্যালভোমিন ইনজেকশন নিতে হচ্ছে।

প্রায়শই গায়ে এবং পায়ে পানি জমে যাচ্ছে। ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়েছেন যথা শিগগিরই দিল্লি গিয়ে অপারেশন করিয়ে আসতে। অপারেশনের জন্য কম করে হলেও ৩০ লাখ টাকা প্রয়োজন। এমন অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন শহীদুল হক খান।

বর্তমান অবস্থা জানিয়ে তিনি বলেন, তেমন একটা ভালো নেই। যতই দিন যাচ্ছে শারীরিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে। অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। ক্যান্সার অনেক কষ্টের। যার হয় সেই একমাত্র বুঝে এর যন্ত্রণা। মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী যদি একটু সহযোগিতার হাত বাড়ায় তাহলে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হতে পারব। না হলে চিকিৎসার অভাবে মরতে হবে। টাকার জন্য চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে।

চলচ্চিত্র অঙ্গনের কেউ খোঁজ নেয়? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার সব থেকে বড় শুভাকাঙ্খী ফরিদুর রেজা সাগর। তিনি সবসময় আমার খোঁজ রাখেন এবং প্রায়ই সহযোগিতা করে থাকেন। এছাড়া অন্যরা সেভাবে খোঁজ রাখে না। সবাই বিভিন্ন উৎসব নিয়ে ব্যস্ত।

এর আগে এই নির্মাতাকে চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ লাখ টাকা সাহায্য করেছিলেন। সেই টাকার সঙ্গে তার নিজের আরো ৪০ লাখ টাকা খরচ হয়েছিল। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। কিন্তু এমন অবস্থায় তার চিকিৎসা করার সামর্থ্য একদম নেই।

কথার ফাঁকে প্রবীণ এই নির্মাতা জানালেন, সুস্থ হয়ে আবারো ফিরতে চান নির্মাণে। ব্যস্ত হতে চান লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনে। নির্মাণ করতে নতুন চলচ্চিত্র। কিন্তু মরণব্যাধি ক্যান্সার তাকে ক্রমেই অচল করে দিচ্ছে। জীবনের শেষ সিনেমা নির্মাণের জন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন শহীদুল হক খান।

১৯৭৩ সালে সমরেশ বসুর উপন্যাস অবলম্বনে বাংলাদেশে প্রথম ভারতীয় নায়িকা ঝুমুর গাঙ্গুলীকে এনে নির্মাণ করেন তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘ছুটির ফাঁদে’। একই সিনেমাতে নিজের লেখা গানের জন্য তিনি গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।  

পরে তিনি একের পর এক চলচ্চিত্র ও নাটক পরিচালনা করেন। ১৯৯৪ সালে বিটিভিতে তিনিই প্রথম সাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের লেখা ও তার পরিচালনায় ‘কোথায় সেজন’ দিয়ে প্যাকেজ নাটক নির্মাণ শুরু করেন।

অসংখ্য টিভি নাটক নির্মাণ করেছেন তিনি। তার হাত ধরেই ‘নায়ক’ নাটক দিয়ে মিডিয়াতে প্রথম আগমন ঘটে চিত্রনায়িকা পপির। এই নাটকে পপি ইলিয়াস কাঞ্চনের নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।

বিভিন্ন পত্রিকায় শহীদুল হক খান সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তার লেখা বেশ ক’টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) এর সিনিয়র সদস্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২২
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।