ঢাকা: পৌষ-মাঘ না এলেও শীতের আগমনী বার্তায় বইতে শুরু করেছে হিমেল হাওয়া। আর শীত এলে কদর বাড়ে লেপ-তোশকের।
পাতলা কাঁথার আবেশ ভুলে লেপের উষ্ণতা উপভোগ করতে চান সবাই। যে কারণে দেশজুড়ে চলছে লেপ-তোশক বিক্রির ধুম।
এমন চিত্রের দেখা মিলল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জসহ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) রূপগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ব্যস্ত সময় পার করছেন এই এলাকার লেপ-তোশকের কারিগররা। তাদেরই একজন ওয়াসিম। রুপগঞ্জের চনপাড়ার বটতলায় এলাকায় তার দোকান।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, দীর্ঘ ২৫ বছর এই কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত আমি। আমার বাবাও লেপ-তোশকের কারিগর ছিলেন।
বাবাকে দেখে দেখে উত্তরসূরি হিসেবে নিজেও কারিগর হয়েছেন বলে জানালেন ওয়াসিম। বললেন, হালকা শীত পড়ায় বেড়েছে তার লেপ-তোশক বিক্রি বেড়েছে।
কথা হয়, রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকার পশ্চিম রসুলপুর মেইন রোডে জান্নাত অ্যান্ড মুন্নি বেডিং স্টোরের সত্ত্বাধিকারী নাসির মিয়া বাংলানিউজকে জানান, শীত বাড়ায় অন্য সময়ের তুলনায় বেচাকেনা বেড়েছে।
এরপর আক্ষেপ ঝরল তার মুখে। তিনি বললেন, গত কয়েক বছর আগেও ভালো বেচাকেনা ছিল। কিন্তু বর্তমানে আর আগের মতো হয় না। বিভিন্ন কোম্পানি নামে বেনামে বিছানার ফোম তৈরি করে বিক্রি করছে। তাছাড়া, বিদেশ থেকে আমদানি করা এক ধরনের মোটা লেপ ও বিভিন্ন কোম্পানির কম্বলে আগ্রহী হয়েছেন অনেকে। এতে এখন লেপ-তোশকের চাহিদা কমেছে।
একই এলাকার বিসমিল্লাহ বেডিং স্টোরের এর মালিক ওয়াসিম। এবার লেপ-তোষকের দাম একটু বেশি বলে জানানলেন তিনি।
ওয়াসিম বলেন, জিনিসপত্রের (তুলা, কাপড়) দাম বেশি থাকার কারণে আমরা এখন আগের তুলনায় একটু দাম বেশি নিচ্ছি ফলে কিছুটা কমেছে এর চাহিদা।
ওয়াসিম মিয়া আরও বলেন, দেশি শিমুলতুলা কেজি প্রতি ১০০০ টাকা এবং ইন্দোনেশিয়ার তুলা প্রতি কেজি ৮০০ টাকা নিচ্ছি। এতে লেপ বানাতে কাস্টমারের বেশি খরচ পড়ে যায়। বেশি খরচ পড়ায় মানুষ এখন দুই হাজার তিন হাজার টাকা দিয়ে কম্বল কিনে নিয়ে আসে। যে কারণে এখন আর লেপের তেমন চাহিদা নাই বললেই চলে।
তবে আরেকটু শীত বাড়লে বিক্রি বাড়বে বলে তার বিশ্বাস।
তিনি জানান, তুলা ভেদে লেপ-তোশকের দামের পার্থক্য আছে। মজুরিও একেক রকম। পলি, শিমুল, পিসি, মাহিশা, ফাইবার, কার্পাস, উল, ব্লাজার ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের তুলা আছে বাজারে। তবে শিমুল ও কার্পাস তুলার লেপ-তোষক বা বালিশ বানাতে খরচটা বেশি পড়ে।
তিনি বলেন, প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা কাজ করে যে উপার্জন হয়, তা দিয়েই এখন সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছি। চাহিদা অনুসারে যে টাকা উপার্জন করি তা দিয়ে বাড়ি ভাড়া ও দোকান ভাড়া দিই। যে টাকা বাকি থাকে, তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চালাই। শীত ছাড়া সারাবছর উপার্জন প্রায় থাকে আরও কম। তবে শীতের সময় লেপ-তোশকের চাহিদা বেশি, অনেকে পুরনো লেপ-তোশক নতুন করে সারাতেও আসে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০২২
এসএএইচ