প্রাণঘাতী ক্যান্সারের কাছে হেরে শুক্রবার (৭ জুলাই) ৬ বছর বয়সী লরি চলে গেছে না ফেরার দেশে। ১৮ মাস বয়সে তার শরীরে বাসা বাঁধা বিরল ক্যান্সারের চিকিৎসায় লাখ লাখ পাউন্ড জমা হয়েছিল।
যুক্তরাজ্য সময় শুক্রবার দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে লরি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। তার মৃত্যুর বিষয়টি পরিবারের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দেওয়া হয়। লরি নিউরোব্লাস্টোমা নামক স্লায়ুতন্ত্রের ক্যান্সারে ভুগছিল। চিকিৎসার শেষ চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর গত ডিসেম্বরেই তার মা জেমা ও বাবা কার্ল জানিয়েছিলেন, লরি আর মাত্র ক’মাস বাঁচবে। তার শেষ এবং চূড়ান্ত চিকিৎসা পর্ব ব্যর্থ হওয়ায় চিকিৎসকরা আর কোনো আশার বাণী দিতে পারেননি। এরপর থেকে ইংলিশ ফুটবল অঙ্গনই যেন লরির জন্য কাঁদতে থাকে।
লরির প্রিয় ফুটবলার হলেন সান্ডারল্যান্ডের স্ট্রাইকার জার্মেইন ডেফো। তিনি সম্প্রতি প্রিমিয়ার লিগের আরেক ক্লাব বোর্নেমাউথের সঙ্গে চুক্তি করেন। চুক্তির পর ছুটে যান লরিকে দেখতে। কিন্তু কোনো সাড়া পাচ্ছিলেন না। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সংবাদ সম্মেলন করে অঝোরে কাঁদতে থাকেন ডেফো। বলেন, লরি সবসময় আমার ছায়া হয়ে থাকবে।
লরিকে মৃত্যু আলিঙ্গন করতে হবে জেনে আগে থেকেই সদা হাসি-খুশি রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে সান্ডারল্যান্ডসহ ইংলিশ ফুটবল অঙ্গন। সান্ডারল্যান্ডের অনেক ম্যাচে প্রিয় দলের জার্সি গায়ে উপস্থিত হয় লরি। সদ্যসমাপ্ত মৌসুমের শুরুর দিকেও লরি এভারটনের সঙ্গে সান্ডারল্যান্ডের একটি ম্যাচ উপভোগ করতে মাঠে যায়। এ সময় তার নামে স্লোগান ধরে পুরো গ্যালারি মুখরিত করে তোলেন দু’দলের সমর্থকেরা।
এরপর লরি তার প্রিয় ক্লাবের সঙ্গে চেলসির একটি ম্যাচ দেখতেও যায়। সেখানে বিরতির সময় মাঠে নেমে পেনাল্টি থেকে একটি গোল করে সে। চেলসির রিজার্ভ গোলরক্ষক বেগোভিচ ইচ্ছে করে গোল হজম করে খুদে ফুটবল-সমর্থকটিকে উচ্ছ্বাসে মাতান। ওই আয়োজনটিই ছিল আসলে লরির জন্য।
গত মার্চেই ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলের মাস্কট হিসেবে লিথুয়ানিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামতে দেখা যায় লরিকে। সেসময়ও ইংল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ার ফুটবলাররা তাকে আনন্দে রাখতে করেন নানা আয়োজন।
এতোসব আয়োজন, এতোসব ভালোবাসাও শেষ পর্যন্ত লরিকে রাখতে পারলো না তার প্রিয় ফুটবলের বিশ্বে। লরি চলে গেল তার প্রিয় দল সান্ডারল্যান্ডের জার্সিগুলো রেখে, তার জার্সিতে দেওয়া ফুটবল হিরোদের অটোগ্রাফ-মোড়ানো ভালোবাসা রেখে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১২ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৭
এইচএ/