প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি) ছাড়তে মরিয়া নেইমার। আদতে তাকে ফেরাতে মরিয়া স্বয়ং বার্সা অধিনায়ক মেসি নিজেও।
নেইমারকে পাওয়ার বিনিময়ে তারই স্বদেশী ফরোয়ার্ড কৌতিনহোকে প্যারিসে পাঠাতে চেয়েছিল বার্সা, এমন খবর শোনা গিয়েছিল কিছুদিন আগেই। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে তাকে ধারে বায়ার্ন মিউনিখে পাঠিয়ে দিয়েছে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু নেইমার ইস্যু এখনও ঝুলেই আছে।
নেইমারকে ফিরিয়ে নিতে বার্সা যে একবারেই চেষ্টা করেনি তা নয়। ক্লাবের কয়েকজন প্রতিনিধি পিএসজির অফিসে গিয়ে আলোচলার টেবিলেও বসেছিলেন। কিন্তু ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা মনে হয় না নেইমারকে এত সহজে ছাড়বে। তবে ফরাসি সংবাদ মাধ্যম ‘লা প্যারিসিয়ান’র দাবি, পুরো ব্যাপারটা নাকি সিরিয়াস নয়। বরং মেসিকে শান্ত ও খুশি রাখাই মূল উদ্দেশ্য।
নেইমারের সঙ্গে মেসির বন্ধুত্বের কথা সুবিদিত। সেটা এমনকি নেইমারের বার্সা ত্যাগের পরও বজায় আছে। তারা দুজনে আর লুইস সুয়ারেস মিলে ‘এমএসএন’ ত্রয়ী গড়েছিলেন, যা তর্কসাপেক্ষে বিশ্বের সেরা আক্রমণভাগের স্বীকৃতি পেয়েছিল। মেসির বহু সাফল্যের সঙ্গী ছিলেন নেইমার। সেই শূন্যস্থান অন্য কেউ পূরণ করতে পারেননি। এজন্যই প্রিয় বন্ধুকে আগের ঠিকানায় ফেরানোর জন্য পরোক্ষে ভূমিকা রাখতে শুরু করেন মেসি।
ফরাসি সংবাদ মাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, নেইমার নাটক পুরোটাই সাজানো। বার্সা আসলে নেইমারকে পেতে সর্বোচ্চ চেষ্টাই নাকি করেনি। তাদের কথার পক্ষে যুক্তি, কৌতিনহোর বায়ার্নে যাওয়া। নেইমারের বিশাল অঙ্কের ট্রান্সফার ফি একমাত্র কৌতিনহোকে দিয়েই স্বাভাবিক অবস্থানে আনার সুযোগ ছিল বার্সার হাতে। কিন্ত সেটাও গেল। এখন বার্সার হাতে সত্যিই তেমন কোনো সুযোগ নেই বললেই চলে। কারণ ২২২ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে যে নেইমারকে দুই মৌসুম আগে পিএসজির হাতে তুলে দিয়েছিল, সেই তাকেই প্রায় ২৫০ মিলিয়ন খরচ করে কিনে আনা বার্সার জন্য প্রায় অসম্ভব।
নেইমার নিজে অবশ্য বার্সায় ফেরার জন্য নিজের ব্যাকুলতা লুকিয়ে রাখেননি। নিজেই মেসির সহায়তা চেয়ে ফোনও করেছিলেন। পরে তার প্রতিনিধিদেরও ক্যাম্প ন্যুয়ে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো চুক্তি স্বাক্ষর তো দূরের কথা, এখনও মূল আলোচনাই দূর অস্ত। নেইমার বেচারাও আসলে বিপদেই আছেন।
যদিও নেইমারকে ধারে নেওয়ার একটা পথ খোলা আছে। কিংবা উসমানে দেম্বেলে, নেলসন সেমেদো এবং ইভান রাকিতিচের বিনিময়েও তাকে চাইতে পারে। এদিকে মৌসুমের প্রথম ম্যাচেই অ্যাতলেটিক ক্লাবের কাছে হেরে যাওয়ায় বার্সার আক্রমণভাগের দুর্বলতাও সামনে চলে এসেছে। এবার হয়ত শুধু মেসি একাই নন, তার সঙ্গে ‘নেইমারকে ফেরাও’ দাবি তুলবেন সমর্থকরাও। সেক্ষেত্রে মুখ ফিরিয়ে রাখা বার্সার জন্য কঠিনই হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৯
এমএইচএম