প্রায় তিন বছর বিরতির পর এই সপ্তাহে ব্যালন ডি’অরের দেখা পেলেন মেসি। মাঝে দু’বার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আর একবার রিয়াল মাদ্রিদের ক্রোয়েট মিডফিল্ডার লুকা মদ্রিচ এই সম্মান ঘরে তুলেছিলেন।
২০০৯ সালে প্রথম ব্যালন ডি’অর জেতা মেসি এখনকার চেয়ে অনেকটাই আলাদা ছিলেন। শারীরিকভাবে চিন্তা করলে সেই মেসির চুল আরও বড় ছিল, কোনো দাড়ি ছিল না এবং মাত্র ২২ বছর বয়সে ১৭৯ ম্যাচ খেলে তার ঝুলিতে ছিল ৯১ গোল। ওই বয়সেই তার নামের পাশে ছিল ১০টি শিরোপা।
২০০৯/১০ মৌসুমে বার্সেলোনার একাদশ
সতীর্থদের মধ্যে ম্যান্যুয়েল পিন্টো, সিলভিনহো এবং গ্যাবি মিলিতো ছিলেন মেসির খুব কাছের। তখনও সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পিচিচি ট্রফি (২০০৮/০৯ মৌসুমে জিতেছিলেন দিয়েগো ফোরলান) জেতা হয়নি তার। আসলে তখনও কলি থেকে কেবলই ফুল হয়ে ফুটতে শুরু করেছিলেন তরুণ বার্সা ফরোয়ার্ড।
কিন্তু ২০০৯/১০ মৌসুমে সবাইকে চমকে দিয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে নিজের জায়গা করে নেন ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা মেসি। এরপর আরও তিনবার ব্যালন ডি’অর জিতে নেন মেসি, যা ফিফার রেকর্ড। এই সময়ে তিনি পেপ গার্দিওলা, টিটো ভিলানোভার অধীনে দুর্দান্ত পারফর্ম করেন। এরপর ২০১৩ ও ২০১৪ সালে রোনালদো এই পুরস্কার বগলদাবা করার পর ২০১৫ সালে ফের পুরস্কার ঝুলিতে পুরেন মেসি, যা তার পঞ্চম পুরস্কার।
প্রথম ব্যালন ডি’অর জেতার ১০ বছর পর, মেসি এখন মাঠে এবং মাঠের বাইরে আরও পরিণত একজন খেলোয়াড়।
বার্সেলোনার বর্তমান একাদশ
প্রথম এবং ষষ্ঠ ব্যালন ডি’অর জেতার মাঝে মেসি বার্সার জার্সিতে ৫২২টি ম্যাচ খেলে ৩৭৭টিতে জয় আর গোল করেছেন ৫২২টি। এই সময়ে ২৪টি শিরোপা জেতার স্বাদ পেয়েছেন তিনি, যার মধ্যে ৭টি লা লিগা, ২টি চ্যাম্পিয়নস লিগ আর ৫টি কোপা দেল রে’র শিরোপা।
মেসি খেলেছেন এমন ৬৬ শতাংশ ম্যাচেই জয় পেয়েছে বার্সা। কিন্তু ২০০৯ এবং ২০১৯ সালের মধ্যে জয়ের হার বেড়ে দাঁড়ায় ৭২ শতাংশে। এই সময়ে মেসির বার্সেলোনার সঙ্গে তিনবার (২০১২, ২০১৪ এবং ২০১৭) চুক্তি নবায়ন করেন। আর সিদ্ধান্তটা যে তিনি ভুল নেননি তা তো প্রমাণিতই।
ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের চঞ্চল ও উচ্ছল মেসি এখন অনেক শান্ত। তিনি এখন নেতা। ম্যাচে নিজেকে কীভাবে উপস্থাপন করতে হবে তা তিনি আগের চেয়ে অনেক ভালো বুঝতে পারেন।
গার্দিওলা থেকে শুরু করে টাটা মার্টিনো, লুইস এনরিকে এবং আর্নেস্তো ভালভার্দের আমল পর্যন্ত মেসির বদলে যাওয়া চলছেই। কিন্তু যা এখনও বদলে যায়নি তা হলো- এখনও তার শিরোপার ক্ষুধা এতটুকু কমেনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৯
এমএইচএম