পিএসজির সঙ্গে কিলিয়ান এমবাপ্পের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। আগামী জানুয়ারিতেই ফরাসি জায়ান্টদের ছেড়ে নতুন কোনো ঠিকানায় পাড়ি জমাতে চান বিশ্বকাপজয়ী ফরোয়ার্ড।
'আরএমসি'-এর বরাত দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে 'মার্কা'। যদিও বিখ্যাত ক্রীড়া সাংবাদিক ফ্যাব্রিজিও রোমানো এক টুইটে জানিয়েছেন, পিএসজি কিছুতেই দলের সেরা ফরোয়ার্ডকে হাতছাড়া করতে রাজি নয়। কিন্তু পিএসজির মালিকপক্ষও এখন অনুধাবন করছে, এমবাপ্পে ক্লাব ছাড়তে মরিয়া এবং এজন্য চাপ প্রয়োগের পথেই হাঁটছেন।
এদিকে 'মার্কা' জানিয়েছে, প্যারিসের ক্লাবটির ম্যানেজমেন্ট গত জুলাইয়ে হওয়া নতুন চুক্তি স্বাক্ষরের সময় এমবাপ্পেকে একটি শর্ত দিয়েছিল। শর্ত অনুযায়ী, চুক্তির মেয়াদ শেষের আগে এমবাপ্পে যদি ক্লাব ছাড়তে চান, তাহলে অন্তত রিয়াল মাদ্রিদে যেতে পারবেন না। বরং তার হাতে একমাত্র বিকল্প হতে পারে লিভারপুল, যারা গত গ্রীষ্মে তাকে পেতে চেয়েছিল।
এমবাপ্পের বিশ্বাস, পিএসজি কর্তৃক 'প্রতারিত' হয়েছেন তিনি। এর কারণ হিসেবে 'মার্কা'র ব্যাখ্যা, গত মে মাসে ক্লাবের ক্রীড়া পরিচালনা বিভাগ তাকে বেশকিছু 'প্রলোভন' দেখিয়েছিল। যা দেখে ২০২৪ সাল পর্যন্ত চুক্তি স্বাক্ষরে রাজি হয়ে যান তিনি। বিনিময়ে ক্লাবের প্রতি বিশ্বস্ত ও নিবেদিত থাকবেন বলে কথা দিয়েছিলেন এমবাপ্পে। কিন্তু বছর না ঘুরতেই ছন্দপতন।
অথচ গত গ্রীষ্মে রিয়াল মাদ্রিদে যাওয়ার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলেন এমবাপ্পে। এমনকি স্প্যানিশ জায়ান্টরা তাকে বরণ করে নেওয়ার প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বাধা হয়ে দাঁড়ায় পিএসজি। এমনকি খোদ ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ নিজে এমবাপ্পেকে প্যারিসে থেকে যেতে অনুরোধ জানান। পরে রিয়ালকে না বলে দেন এমবাপ্পে; সেই সঙ্গে পিএসজির সঙ্গে নতুন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন তিনি।
এমবাপ্পেকে নিয়ে টানাপড়েনের কারণে রিয়াল ও পিএসজির সম্পর্কেও অবনতি হয়। দুই ক্লাবের প্রেসিডেন্ট খোলামেলা একে অন্যের সমালোচনায় লিপ্ত হন। তাছাড়া সুপার লিগ নিয়ে ভিন্ন অবস্থানের কারণেও রিয়াল প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ ও পিএসজি প্রেসিডেন্ট নাসে আল খেলাইফির মধ্যে মতভেদ বাড়তে থাকে।
এরপর মৌসুম শুরুর পর নেইমার জুনিয়রের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান এমবাপ্পে। স্পটকিক কে নেবেন, তা নিয়ে ঝগড়াও হয় তাদের। পরে এই ঝগড়া গিয়ে গড়ায় ড্রেসিংরুম পর্যন্ত। দলের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে বিভক্তি। অন্যদিকে নেইমার ও লিওনেল মেসি দুজনের গভীর বন্ধুত্ব তাকে একা করে দিয়েছে। দুই সাবেক বার্সা সতীর্থ আবার মাঠেও আলো ছড়াতে শুরু করেছেন। আর এমবাপ্পের ক্ষেত্রে হচ্ছে ঠিক উল্টোটা। সবমিলিয়ে এমবাপ্পে আর কিছুতেই মানিয়ে নিতে পারছেন না।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২২
এমএইচএম