ঢাকা: প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ তামাক। এর কারণে বিশ্বে প্রতিবছর ৮০ লাখের বেশি মানুষ মারা যায়।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর বিএমএ ভবনে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী চলা ‘তামাক নিয়ন্ত্রণে গণমাধ্যম’ শীর্ষক কর্মশালায় এসব বলেন আলোচকরা।
তামাকের বহুমাত্রিক ক্ষয়-ক্ষতি রোধে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ, জোরালো কর ও মূল্য পদক্ষেপ নেওয়া এবং কোম্পানির কূটকৌশল সম্পর্কে সজাগ থাকার আহ্বান জানান বিশেষজ্ঞরা।
গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা) আয়োজিত কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন ও অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২৭ সাংবাদিক অংশ নেন।
কর্মশালায় জানানো হয়, বাংলাদেশে ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রতি বছর এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়। পঙ্গুত্ব বরণ করে আরও কয়েক লাখ মানুষ। সবমিলিয়ে বাংলাদেশে তামাকের ব্যবহার জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতি এবং পরিবেশের জন্য ক্রমবর্ধমানভাবে হুমকি সৃষ্টি করছে।
কর্মশালায় আরও জানানো হয়, তামাক টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে একটি বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণের কোনো বিকল্প নেই।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রস্তুত করা আইনের খসড়া সংশোধনীতে সব পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান রাখার বিধান বিলুপ্তকরণ, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য বা প্যাকেট প্রদর্শন নিষিদ্ধ, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধকরণ, ই-সিগারেট, ভ্যাপিং, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টসহ এ ধরনের সব পণ্য উৎপাদন, আমদানি ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করাসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় কোম্পানির প্রভাবমুক্ত থেকে খসড়াটি দ্রুত পাসের আহ্বান জানানো হয়।
তামাক ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার জন্য কর বাড়ানোর মাধ্যমে তামাক পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি বলে কর্মশালায় জানানো হয়।
বাংলাদেশে তামাক কর কাঠামো ত্রুটিপূর্ণ এবং তামাকপণ্য অত্যন্ত সস্তা ও সহজলভ্য উল্লেখ করে কর্মশালায় জানানো হয়, সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপের মাধ্যমে সব ধরনের তামাকপণ্যের দাম জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়া এবং সিগারেটের মূল্যস্তর পর্যায়ক্রমে চারটি থেকে কমিয়ে একটিতে আনার আহ্বান জানানো হয় কর্মশালায়।
দুই দিনব্যাপী কর্মশালায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিসিআইসির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের এপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী, এনটিভির হেড অব নিউজ জহিরুল আলম, আত্মা’র কনভেনর লিটন হায়দার, কো-কনভেনর মিজান চৌধুরী, এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৫
ইএসএস/আরএইচ