ঢাকা, শুক্রবার, ৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১ শাবান ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

শেবামেকে কমপ্লিট শাটডাউনের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫
শেবামেকে কমপ্লিট শাটডাউনের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল

বরিশাল: বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজে (শেবামেক) শিক্ষার্থীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির তৃতীয় দিন আজ বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি)। এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় কলেজের একাডেমিক ভবনের প্রশাসনিক শাখার গেটের সামনে থেকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা।

মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে হাসপাতালের সামনে বান্দরোডে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে আয়োজিত মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেন।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশের অন্যতম প্রধান চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও, বর্তমানে শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা উভয় ক্ষেত্রেই বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।  
তারা বলেন, বর্তমানে কলেজে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক না থাকায় একাডেমিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। বিশেষ করে মেডিসিন, মাইক্রোবায়োলজি, প্যাথলজি, ফিজিওলজি, সিসিইউ, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি ডিপার্টমেন্টসহ ডেন্টাল ইউনিটেরও অধিকাংশ ডিপার্টমেন্টে শিক্ষক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে।  

এতে মানসম্মত ক্লাস ও প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, এই মেডিকেল কলেজে ৬০ শতাংশের ওপর শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে বর্তমানে। তারা চান দ্রুত শূন্য পদে শিক্ষকদের পদায়ন হোক এবং সাম্প্রতিক সময়ে বিনা কারণে বদলি করা শিক্ষকদের ফিরিয়ে আনা হোক।

শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষক সংকট নিরসন ইস্যুতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নীরব ভূমিকার প্রতিবাদে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির মধ্যেই বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন তারা। শিক্ষক সংকট নিরসন ইস্যুর মতো যৌক্তিক দাবি না মানা পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চলবে।

মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান নাঈম বলেন, শিক্ষক সংকট ইস্যুতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির কারণে মেডিকেল কলেজে ক্লাস, পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তারা কলেজের প্রধান ফটকগুলোতে তালা দিয়ে কমপ্লিট শাটডাউনের ব্যানার টানিয়ে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে স্মারকলিপি দিয়ে কলেজ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে দাবির কথা জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এ পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি কোনো উদ্যোগ নেননি। আমরা দ্রুত শিক্ষক সংকট নিরসনের দাবি জানাচ্ছি, অন্যথায় আন্দোলন চলমান থাকবে।  

এই শিক্ষার্থী বলেন, আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ডেন্টাল অনুষদের প্রফেশনাল পরীক্ষা ও ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই অনুষদের ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম ব্যাহত হলে এর দায়ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। আমরা কোনোভাবে দাবি না মানা হলে আমাদের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়াবো না এবং কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলবে।

কলেজের প্রশাসনিক শাখা জানায়, কলেজে শিক্ষকদের ৩৩৪টি পদের মধ্যে ১৪৬টি পদে শিক্ষক রয়েছে, বাকি ১৮৮ পদ শূন্য রয়েছে।

বুধবার সকালে  ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা কর্মসূচির কারণে অধ্যক্ষ কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান নিয়েছেন। আর প্রধান ফটকগুলো তালাবদ্ধ দেখে শিক্ষকরা বাহিরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।

নিউনেটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. বিধান চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে সকালে কলেজে গিয়ে হাজিরা দিতে পারিনি, বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। তবে তাদের দাবি যৌক্তিক। ভালো শিক্ষার জন্য শিক্ষকের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা আশা করি দ্রুত শিক্ষক সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেবে সরকার।

শিক্ষক সংকটের কথা স্বীকার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার বলেন, শিক্ষার্থীদের এই দাবি যৌক্তিক এবং তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছি। দ্রুত সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫
এমএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।