ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

সিজারে সন্তান জন্ম দেন ২৮ শতাংশ মা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৯ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৫
সিজারে সন্তান জন্ম দেন ২৮ শতাংশ মা ছবি: প্রতীকী

ঢাকা: বাংলাদেশে ২৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ মা সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেন। আর স্বাভাবিকভাবে সন্তান জন্ম দেন ৭১ দশমিক ৩৩ শতাংশ মা।



সন্তান প্রসবকালীন সহায়তাকারী শতকরা ৩০ দশমিক ৮ ভাগই অদক্ষ (দাই) এবং দক্ষ (দাই) মাত্র ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ ।

সোমবার (২৯ জুন) রাজধানীর আগারগাঁও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোয় ‘হেলথ অ্যান্ড মরবিডিটি স্ট্যাটাস সার্ভে-২০১৪’র ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।

জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন এ কর্মসূচির পরিচালক জাফর আহাম্মদ খান।

জরিপে যে সব রোগ সম্পর্কে তথ্য নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে সর্বাধিক আক্রান্ত ১০টি রোগের মধ্য রয়েছে-জ্বর, আলসার, বাত, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আমাশয়, হৃদরোগ, বক্ষব্যাধি, চোখের ছানি ইত্যাদি।

জরিপে দেখা যায়, সন্তান প্রসবকালীন সহায়তাকারী স্বাস্থ্যকর্মী শতকরা ২ দশমিক ৬ শতাংশ, নার্স ১৪ শতাংশ, ডাক্তার ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ। ৭৪ দশমিক ১০ ভাগ মায়েরা টিকাদান সম্পর্কে জানেন আর ২৫ দশমিক ০৯ শতাংশ ‍মায়েরা ‍এ সম্পর্কে জানেন না।

জরিপের তথ্য মতে, বাংলাদেশের তামাক ও নেশা জাতীয় দ্রব্যের ব্যবহারের মধ্যে ধূমপান ২৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ, তামাক পাতা ১৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ, মদ ১১ দশমিক ৮৬ শতাংশ, ফেনসিডিল ০ দশমিক ০২ শতাংশ, হেরোইন ০ দশিক ০১ শতাংশ, জর্দা ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং ইয়াবা ০ দশমিক ১ শতাংশ ব্যবহার করে।

পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা জলবসন্ত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে চক্ষু প্রদাহ, চর্মরোগ, ডায়রিয়া মতো রোগেও আক্রান্ত হচ্ছে।

জরিপ বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশের ৮৩ দশমিক ২৩ শতাংশ জনগণ নলকূপের পানি পান করে। তার মধ্যে পল্লি এলাকায় ৯২ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং শহর এলাকায় ৫৩ দশমিক ০৯ শতাংশ গভীর নলকূপের পানি পান করে। বাংলাদেশের ৬২ দশমিক ০৫ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ এবং ২৯ ভাগ মানুষ কেরোসিন ব্যবহার করে।

জরিপের ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের (বিবিএস) সচিব কানিজ ফাতেমা,  মহাপরিচালক মোহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ, অতিরিক্ত সচিব বাইতুল আমীন ভুঁইয়া।

বিবিএস’র তথ্য মতে, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৮৩-৮৪ সালে দেশে সর্বপ্রথম হেলথ অ্যান্ড মরবিডিটি স্ট্যাটার্স সার্ভে অনুষ্ঠিত হয়। এর পর ২০০০ সালে বিবিএস ফের এ ধরনের জরিপ পরিচালনা করে। ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত জরিপের ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালে পুনরায় স্বাস্থ্য সম্পর্কিত  এ জরিপটি পরিচালনার উদ্যোগ নেয় বিবিএস। সারা দেশে মোট ৩৭ হাজার ৫শ’ নমুনা জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এ জরিপের মাধ্যমে যে সব বিষয় বিবেচনায় তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-বয়স ও লিঙ্গভিত্তিক জনসংখ্যার বর্তমান বিবাহের শতকরা হার, লিঙ্গভিত্তিক জনসংখ্যার শিক্ষার  হার (৫ বছর ও তদুর্ধ্ব), এলাকা ভেদে খাবার পানির উৎসগুলোর শতকরা হার।

এছাড়া, আলোর উৎসের শতকরা হার, এলাকা ভেদে মশা থেকে প্রতিরোধের উৎসের শতকরা হার, খাবার থেকে স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাগুলো দূরুত্বের (কিলোমিটারে) শতকরা হার, এলাকা ও লিঙ্গ ভেদে তামাকজাতীয় দ্রব্য ও নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণের শতকরা হার।

অন্যদিকে, নেশাজাতীয় দ্রব্যগ্রহণের শতকরা হার, আঘাতভিত্তিক আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির শতকরা হার, আঘাত/দুর্ঘটনা কবলিত ব্যক্তির যানবাহনের ধরনের শতকরা হার। ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের এইচআইভি সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার মাধ্যমগুলোর শতকরা হার, প্রতিবন্ধকতার ভিত্তিতে শারিরীক ও মানসিক প্রতিবন্ধীদের হার নির্ণয় করা হয়েছে।

শীর্ষ ১০টি আক্রান্ত রোগের হার (প্রতি হাজারে), নির্বাচিত রোগের প্রতি হাজারে হার, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর নির্বাচিত রোগের প্রতি হাজারে হার, বিভাগভিত্তিক মেডিকেল ও রুটিন চেকআপের শতকরা হার, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক মেডিকেল ও রুটিন চেকআপ মহিলাদের শতকরা হার নির্ণয় করা হয়েছে।

চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক চিকিৎসা গ্রহণকারীদের শতকরা হার, সব টিকাদান কর্মসূচি সম্পর্কে মায়েদের পরিচিতির শতকরা হার, সন্তান প্রসবের ধরনের শতকরা হার ও সন্তান প্রসবকালীন সহায়তাকারীদের শতকরা হারও জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৫
এমআইএস/টিআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।