ওয়ার্ডে এসে রক্ত-মল-মূত্রের নমুনা সংগ্রহ, প্যাথলজিতে পরীক্ষা করিয়ে- রিপোর্ট সংগ্রহ করে রোগীর কাছে পৌঁছে দেওয়াই তার ব্রত।
নতুন কোনো রোগী আসার সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দেওয়াও- ‘বাইরে থেকে কোনো পরীক্ষা করানো যাবে না, এই হাসপাতালেই করাতে হবে’ তার কর্তব্য।
কিন্তু শহীদের মর্যাদা তার সইলো না! বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন স্বজনকে দেখতে আসেন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহ-সভাপতি মো. তোফাজ্জেল হক চয়ন।
রোগীর চিকিৎসা নথি দেখতে ফাইল হাতে নিয়ে তার চক্ষু চড়ক গাছে! প্যাথলজি বিভাগ থেকে দেওয়া রিপোর্টে চিকিৎসকের সই নেই। এরপর তিনি অন্যান্য রোগীদের ফাইল দেখেন- একই অবস্থা। যে ক’জনের রয়েছে তা-ও অস্পষ্ট।
খোঁজ করতেই বিপদের কাণ্ডারী শহীদ এসে নিজেকে বার্ন ইউনিটের ‘স্পেশাল ওয়ার্ড বয়’ পরিচয় দেন। কথায় কথায় এ-ও জানিয়ে দেন, তিনি প্রায় ছয়-সাত বছর ঢামেক হাসপাতালে কাজ করছেন। কিন্তু প্যাথলজি বিভাগের চিকিৎসকের সই নেই কেন? এর উত্তর দিতে না পারায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) জাকির হোসেনের দফতরে।
এদিকে বিষয়টি নজরে আসতে প্রতিবাদের লাইনে দাঁড়ান আরও অনেক রোগীর স্বজন।
বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আব্দুল কুদ্দুসের আট বছর বয়সী মেয়ে মারুফা, তোফাজ্জলের দেড় বছর বয়সী ছেলে আবদুল্লাহ, পারভীনের চার বছর বয়সী ছেলে সিয়াম।
বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, সাদা কাগজে লেখা রিপোর্ট আদৌ প্যাথলজি বিভাগের কি-না তা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্যাথলজির কোন চিকিৎসক রিপোর্ট দেন- সে উত্তর এড়িয়ে যান শহীদ।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রি. জেনারেল মিজানুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে বার্ন ইউনিটের ল্যাব টেকনোলজিস্ট প্রণব চক্রবর্তীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং দালাল শহীদকে (৩৭) শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
এই অনিয়ম তদন্তে উচ্চ পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৭
এটি