ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

প্রধান উপদেষ্টা হয়েও কিছু জানেন না মুহিত!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৭
প্রধান উপদেষ্টা হয়েও কিছু জানেন না মুহিত! অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ২০০৯ সালে রাজধানীর আঁগারগাওয়ে ইএনটি অ্যান্ড হেড-সেক ক্যান্সার হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। এরপর আর প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে কোনো কথা শোনেননি তিনি। যদিও এর পরিচালনার দ্বায়িত্বে থাকা ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা তিনি। 

রোববার (১২ মার্চ) হাসপাতালে ‘প্রফেসর এম আলাউদ্দিন সার্জিক্যাল স্কিল ল্যাব’ এর উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই না জানার বিষয়টি উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। তবে ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক একেএ মবিন স্মরণ করিয়ে দেন অর্থমন্ত্রীর পদের কথাটি।

 
 
অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালের দিকে কয়েকজন এই ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। জমি বন্দোবস্ত হলে নতুন ভবন ওঠে। এরপর আর কোনো যোগাযোগ নেই। ২০০৯ সালের পর এই প্রতিষ্ঠানের কথা আর শুনিনি। এখন আবার এলাম।  
 
প্রতিষ্ঠানটির স্বপ্নদ্রষ্টা অধ্যাপক আলাউদ্দিনের মৃত্যুর খবরও জানতেন না উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি ইনফ্যাক্ট এখানে আসার আগে জানতামই না, যে আলাউদ্দিন সাহেব আর নেই এই দুনিয়াতে। অনেকদিন আগেই চলে গিয়েছেন। এখানে মিসেস আলাউদ্দিনের সঙ্গে দেখা হলো। তিনি (অধ্যাপক আলাউদ্দিন) একটি বড় কাজ করে গেছেন আমাদের সমাজের জন্য। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো আমাদের সবার প্রয়োজন।
 
তবে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর এই দূরত্ব থাকার কথা নয় বলে জানালেন, ইএনটি অ্যান্ড হেড-নেক ক্যান্সার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক এ এম এ মবিন। তিনি শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, অর্থমন্ত্রীর এখানে উপস্থিতির বিষয়টি শুধুই আসলেন এবং বসলেন নয়। তিনি হচ্ছেন এই ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা। আমাদের কনসটিটউশনে বাই পজিশন উনি হচ্ছেন চিফ পেট্রোল।
 
অধ্যাপক মবিন বলেন, এটি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এখানে দিন দিন মানুষের সেবা নেওয়ার হার বাড়ছে। বেতন বাবদ বড় একটি সাপোর্ট আসে সরকার থেকে।  
 
তিনি বলেন, এই সাপোটর্টা অব্যাহত থাকবে আশা করি। কিন্তু এর অতিরিক্ত হাসপাতালের ভবিষ্যতের জন্যে আরও কিছু কাঠামো নির্মাণ দরকার। কিছুটা ফিজিক্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার, কিছুটা ল্যন্ড প্রয়োজন। সেই বিষয়টাও সরকারের সঙ্গে সিদ্ধান্তের একটা পর্যায়ে পৌঁছে আছে। সেই সিদ্ধান্তটায় একটু সময় লাগবে।
 
অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমরা এই বিষয়ে পেট্রোলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
 
এর আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী এ ধরনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার বিষয়ে বলেন, ছোট  উদ্যোগে যদি ডেডিকেটেড কেউ থাকে, তাহলে সঠিক পথে কাজটি করা যায়।
 
প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে জড়িতদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের এই উদ্যোগটা খুবই ভাল। খুব ভাল লাগছে যে প্রতিষ্ঠানটি যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে।
 
উৎসাহ দিয়ে তিনি বলেন, আই অ্যাম ইন পাবলিক লাইফ মোর দেন সিক্সটি ইয়ারস। এখানে তেমন কারও বয়স নেই ৬০ বছর। বেশিরভাগই এর চেয়ে ছোট। এখানে মৃতসঞ্জিবনী সুধা মানুষকে অন্যের জন্য কাজ করার ক্ষমতা দেয়। মানবতার জন্য, বন্ধুদের জন্য, আশপাশের মানুষের জন্য। এই সময় এসেও কাজের সুযোগ পাচ্ছি এজন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।  
 
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আব্দুল মুয়িদ চৌধুরী স্বল্প খরচে ল্যাব সুবিধা দেওয়ার সুপারিশ করেন।  
 
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইনএনটি অ্যান্ড হেড-নেক ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. জাহানার আলাউদ্দিন। কর্মশালায় আর্ন্তজাতিক ফ্যকাল্টি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভারতের চেন্নাইয়ের ইএনটি রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মুখ্য শল্যবিদ অধ্যাপক মোহন কামেশ্বরান।  
 
মরহুম অধ্যাপক ডা. এম আলাউদ্দিন ও অন্যান্য উদ্যোক্তাদের প্রচেষ্টায় ২০০৪ সালে যাত্রা করে এই হাসপাতাল। পরে ২০০৯ সালে সরকার থেকে বরাদ্দকৃত জমিতে আঁগারগাওয়ে ৫ তলা ভবনে যাত্রা শুরু করে বিশেষায়িত হাসপাতালটি।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৪ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৭
এমএন/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।