চট্টগ্রামে সপ্তাহের যেকোনো দিন এই বিশেষ সেবা পাওয়া যাবে শুধু এএফসি হেলথ ফরটিস হার্ট ইনস্টিটিউটে।
গবেষণায় জানা যায়, হার্ট অ্যাটাকের পর শতকরা ২৫ জন প্রথম একঘণ্টার মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
বুকে প্রচণ্ড ব্যথা হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণ। তবে ডায়াবেটিক রোগী বা প্রবীণ ব্যক্তিরা সবসময় বুকে ব্যথা অনুভব নাও করতে পারেন। এটি আরও মারাত্মক হার্ট অ্যাটাক। এ সময় ব্যথা বুক থেকে গলার বাম দিকে, বাম বাহু হয়ে হাত পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে, বমি বা বমির ভাব, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসা, মাথা ঝিমঝিম করা, প্রচুর ঘাম, দম বন্ধ হয়ে আসা, শ্বাসকষ্ট, ক্ষীণ ও দ্রুত পালস (নাড়ির গতি), নিম্নগতি ও রক্তচাপ প্রভৃতি সমস্যাও পরিলক্ষিত হয়।
অনেকে হৃদরোগের ব্যথাকে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা ভেবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হয়ে নিজে নিজেই অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ খেয়ে মারাত্মক ভুল করেন। এই ভুল কখনও কখনও হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুঝুঁকি বাড়ায়।
প্রাইমারি পিসিআই মানে হচ্ছে হার্ট অ্যাটাক বা অ্যাকিউট মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন যুক্ত রোগীদের করোনারি এনজিওপ্লাস্টি করা। এই পদ্ধতিতে, বন্ধ বা সরু হয়ে যাওয়া ধমনীতে একটি বেলুন ক্যাথেটার প্রবেশ করিয়ে সেই ধমনীর রক্ত চলাচলের পথ উন্মুক্ত করে স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়।
কার্ডিয়াক ক্যাথেটারাইজেশন ল্যাবরেটরি (ক্যাথ ল্যাব)-এ রোগীকে নিয়ে এধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। এতোদিন চট্টগ্রামে এই সেবা ছিল অনেকটাই অপ্রতুল। এএফসি হেলথ ফরটিস হার্ট ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম সপ্তাহের যেকোনো দিন যেকোনো সময় প্রাইমারি পিসিআই সেবা দিচ্ছে।
এতোদিনে বিপদের মুহূর্তে চট্টগ্রামবাসীর যাওয়ার একটি জায়গা তৈরি হয়েছে। এখন আর রোগীকে ঢাকায় নেওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ প্রয়োজন নেই।
এএফসি হেলথ ফরটিস হার্ট ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামে দু’টি বিশ্বমানের ক্যাথ ল্যাব স্থাপন করেছে। ক্যাথ ল্যাব সম্পর্কে এএফসি হেলথ ফরটিস হার্ট ইনস্টিটিউটের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. তারেক বিন রশিদ বলেন, আমাদের ক্যাথ ল্যাব দু’টি খুবই অত্যাধুনিক (FFR/IFR) প্রযুক্তি সম্বলিত। IFR টেকনোলজি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের আর কোনো ক্যাথ ল্যাবে নেই। এর মানে হচ্ছে, এই ল্যাবে অধিকতর নিশ্চিত হয়ে ভালোভাবে হার্টের সব প্রসিডিওর চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারেন।
প্রাইমারি পিসিআই চিকিৎসা পদ্ধতিতে কি ধরনের স্টেন্ট ব্যবহার হয় প্রশ্ন ছিল এএফসি হেলথ ফরটিস হার্ট ইনস্টিটিউটের চিফ কনসালট্যান্ট ডা. এ এম শফিকের কাছে। তিনি বলেন, সাধারণত স্টেন্ট দুই ধরনের হয়ে থাকে। যেমন মেডিকেটেড স্টেন্ট ও নন-মেডিকেটেড বা নরমাল স্টেন্ট।
তিনি আরও বলেন, মেডিকেটেড (ওষুধযুক্ত) স্টেন্ট হলো এক প্রকার ধাতব স্টেন্ট যাতে ওষুধের প্রলেপ দেওয়া রয়েছে, যেন রক্তনালি পুনরায় সংকুচিত হয়ে না পড়ে। আরেকটি হলো নরমাল বা সাধারণ ধাতব স্টেন্ট। শুধু ধাতব স্টেন্ট ব্যবহার করলে রক্তনালি পুনরায় সংকোচনের সম্ভাবনা থাকে শতকরা ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ, কিন্তু ওষুধযুক্ত ধাতব স্টেন্ট ব্যবহারে সেই সম্ভাবনা শতকরা ৬ থেকে ৮ শতাংশ। আমরা রোগীর প্রয়োজনানুসারে, সামর্থ্য অনুযায়ী স্টেন্ট ব্যবহার করি।
এএফসির খুলনা ইউনিট শতবর্ষী নারীর দেহে এধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করে চিকিৎসা বিজ্ঞানকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। সমগ্র উপমহাদেশে এধরনের নজির আছে বলে শোনা যায়নি।
এএফসি হেলথ ফরটিস হার্ট ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তারা চট্টগ্রামবাসীর জন্য আরও নতুন নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে আসতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৯ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৭
এসআই/এএ