কোনো দেশে ঢুকতে গেলে, রাজনৈতিক সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া। কিন্তু সেই বেড়া কি কখনও মানুষকে দমিয়ে রাখতে পারে বা পেরেছে? এক দেশের মানুষ নানা প্রয়োজনে হাজির হয়েছে অন্য দেশে।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সাথে সাথে বেড়েছে মানুষের আসা-যাওয়াও। এই আসা-যাওয়ার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ চিকিৎসা। চিকিৎসার জন্য বহু মানুষ এখন এক দেশ থেকে অন্য দেশে পাড়ি জমান। আবার নিজের দেশে ফিরে আসেন সুস্থ হয়ে।
কিন্তু শুধু চিকিৎসা নয়, এই সুযোগে তারা পরিচিত হন সেই দেশের শিল্প-সংস্কৃতি, মানুষ এবং তার প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে। চিকিৎসার সাথে সাথে ভ্রমণের এই মিলিত পরিষেবাকেই বলা হয় “মেডিকেল ট্যুরিজম”। বা সরল বাংলায় বললে ‘‘চিকিসা পর্যটন’’।
কম খরচে বিশ্বমানের সর্বাধুনিক চিকিৎসা, থাকার আধুনিক ব্যবস্থার ফলে বিশ্বের বহু দেশ থেকে, সব প্রান্ত থেকে, বিরাট সংখ্যক মানুষ ছুটে আসেন ব্যাঙ্ককে।
থাইল্যান্ডে আধুনিক চিকিৎসার সাথে আছে দেখবার মতো অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও। একদিকে নীল সমুদ্রের হাতছানি, আবার কোথাও পাহাড়ি ঝরনা। এছাড়াও আছে ইতিহাসপ্রসিদ্ধ নানান স্থান। যেগুলির আকর্ষণও পর্যটকদের কাছে কম নয়।
কথা হচ্ছিল ভিভাবাডি হাসপাতালের মার্কেটিং বিভাগে কর্মরত মাহমুদুর রহমান রনির সাথে। রনি ভাইয়ের শেকড় বরিশালের পিরোজপুরে। বাঙালি হওয়ার সুবাদে গত ছয় বছর ধরে হাজার হাজার বাংলাদেশি রোগীর চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন।
জানতে চাইলাম, ব্যাঙ্ককে অন্যান্য হাসপাতাল ছেড়ে রোগীরা কেন ভিভাভাডিতে ছুটে আসবে, কোন যুক্তিতে?
উত্তরে তিনি বললেন, আর পাঁচটা নামিদামি হাসপাতালের মতো হয়তো বসার চেয়ার বা বেডটা অতো লাক্সারিয়াস নয়, তবে দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি আর পাঁচটা উন্নত বেসরকারি হাসপাতালের মতো ভিভাভাড়ি হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার মানও সমান। এখানে টাকা খরচ কম। এছাড়া আর কোনো পার্থক্য নেই।
বাংলাদেশি কোনো রোগী যদি ভিভাবাডিতে চিকিৎসা করাতে চান, তাহলে তাকে আগেই এখানে আসতে হবে না। তিনি তার সমস্যা আর টেস্ট রিপোর্ট ইমেইল করে জানালেই হবে। আমরা আমাদের ডাক্তারদের সাথে আলাপ করে জানাবো কত খরচ, কতদিন থাকতে হবে ব্যাঙ্ককে। আর এই ইমেইল মারফত রিপোর্ট দেখার জন্য মূল্য ধার্য করা হয় না।
যা আর পাঁচটা বেসরকারি হাসপাতাল করে থাকে। উড়োজাহাজ থেকে মাটিতে পা ফেলার পর থেকেই রোগীর সমস্ত দায়িত্ব নিই আমি ও আমার ভিভাবাডি হাসপাতাল। চিকিৎসার ব্যবস্থা, হাসপাতালে ভর্তি, প্রয়োজনীয় শুশ্রূষার ব্যবস্থা, ঔষধের ব্যবস্থাসহ যাবতীয় দায়িত্ব নেওয়া হয়।
এছাড়া কারেন্সি এক্সচেঞ্জ, দেশের সাথে যোগাযোগ সব ব্যাপারেই পাশে থাকি আমরা। অথবা, তারা যদি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যেতে চান এজেন্সির মাধ্যমে তারও ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। বিদেশের মাটিতে রনি ভাই পাশে থাকেন নিকট আত্মীয়ের মতো।
বাংলাদেশ ছাড়াও আমেরিকা, ইউরোপ, সৌদি আরবসহ বহ দেশ ও এলাকা থেকে প্রচুর মানুষ ভিভাবাডিতে আসেন চিকিৎসা করাতে। এর কারণ থাইল্যান্ডের দক্ষ চিকিৎসক ও সেই সঙ্গে অত্যাধুনিক পরিষেবা। হাসপাতালেই রয়েছে শপিংয়ের ব্যবস্থা।
রোগীর কোনো স্বজন বা রোগীরা ইচ্ছে করলেই হাসপাতালের শপিং মলে কেনাকাটা সারতে পারেন।
বর্তমানে ভিভাবাডি গ্রুপে, ভিভাবাডি, ভিভারাম, রামকাম হ্যাং, সিম প্যাক, বুরিন্দারা, জাপান অ্যাঙ্কর মতো হাসপাতালগুলি চিকিৎসা পরিষেবায় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। আগামী দিনে এই পরিষেবা আরও প্রসারিত হবে বলে মনে করছেন চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা , রোগী ও তাদের স্বজনরা।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৯ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৭
জেএম/