বিকট আওয়াজের হর্ন সয়েই যানবাহন সামলাতে গলদঘর্ম হতে হয় ট্রাফিক পুলিশদের। তাদের বসার জন্য কোনো পুলিশ বক্সও নেই এই মোড়ে।
বুধবার (১৯ জুলাই) দুপুরে মগবাজার চৌরাস্তা মোড়ে দায়িত্বরত রমনা জোনের ট্রাফিক পুলিশ মো. মশিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, চারপাশ থেকে আসা গাড়ির হর্নের শব্দেই আমরা কাহিল হয়ে যাই। মাথা ব্যথা করে। ঠিকমতো ঘুম হয় না। আগের তুলনায় এখন কানেও অনেক কম শুনি।
চালকরা অযথাই হর্ন বাজায় বলেও জোর অভিযোগ ভুক্তভোগী এই ট্রাফিক পুলিশের।
শব্দদূষণে হাসপাতালে রোগীদের ভোগান্তি
তিনি বলেন, কাজ শেষ করে যখন বাসায় যাই, তখন মাথা ভন ভন করে। আগে টেলিভিশনের সাউন্ড ২০ পর্যন্ত থাকলেও কানে লাগতো, কিন্তু এখন ৪০ পর্যন্ত দিলেও শুনি না। এজন্য বাসায় টেলিভিশন দেখাই বন্ধ করে দিয়েছি। রাতে ঘুমালেও মনে হয়, কানের কাছে কেউ এসে হর্ন বাজাচ্ছে।
দু’বছর ধরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগে কর্মরত রয়েছেন মো. মশিউর রহমান। তার বাড়ি রংপুর বিভাগের নীলফামারী জেলায়। বুধবার দুপুর ২টা থেকে শুরু করে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ডিউটি টাইম তার।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, উপরে ফ্লাইওভার, নিচে রাস্তা। আর এই চত্বরে চারপাশ থেকেই গাড়ির ভেঁপু-পেপু’র শব্দ আসে। এই মোড়ে সব ধরনের শব্দই হয়। রিকশা’র বেল, প্রাইভেটকার, বাস, মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের গাড়ির হর্নের শব্দ হয়। এক মিনিটের জন্যও শান্ত থাকে না এ এলাকা।
পরিবেশ অধিদফতরের এক জরিপে দেখা গেছে, ঢাকায় যানবাহনের শব্দের মাত্রা ৯৫ ডেসিবেল, কল-কারখানায় ৮০-৯০ ডেসিবেল, সিনেমা হল ও রেস্তোরাঁয় ৭৫-৯০ ডেসিবেল, যে কোনো অনুষ্ঠানে ৮৫-৯০ ডেসিবেল, মোটরবাইকে ৮৭-৯২ ডেসিবেল, বাস এবং ট্রাকে ৯২-৯৪ ডেসিবেল। শব্দের এতো বেশী মাত্রা মানুষের মস্তিষ্কের বিকৃতি এবং জটিল সব রোগ সৃষ্টি করে। এর কারণে উচ্চ রক্তচাপ, কণ্ঠনালীর প্রদাহ, মস্তিষ্কের রোগ, কাজ করার ক্ষমতা হ্রাস, বদমেজাজ বা খিটখিটে মেজাজ, ক্রোধ প্রবণতা, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, রক্তনালীর সংকোচন এবং হার্টের সমস্যাও দেখা দেয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৭
এসজেএ/জেডএম