বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) মহাখালীতে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিজ রিসার্চ বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) কনফারেন্স হলে সরকারের সঙ্গে আইসিডিডিআরবি'র স্বাস্থ্যখাতে সহযোগিতার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যখাতকে বর্তমান সরকার অনেক গুরুত্বের সঙ্গে দেখেছে সব সময়।
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্বের মধ্যে একটি উন্নত দেশ জার্মানি। তারাও এক লাখ বহিরাগতদের স্থান দেয়ার সাহস পায় নি। কিন্তু বাংলাদেশ একটি দরিদ্র দেশ হবার পরও ১০ লাখ রোহিঙ্গা বা বহিরাগতদের আশ্রয় দেয়ার সাহস দেখিয়েছে। তা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মত বিচক্ষণ নেত্রীর জন্য। মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা সম্পর্কে একেবারে অপরিচিত ও অজ্ঞ ছিল। তারা এই সেবার সঙ্গে পরিচিত হয়েছে বাংলাদেশে এসে। এখন সেখানে বড় ধরণের রোগের আশঙ্কা করা যাচ্ছে। এই জন্য আমি আইসিডিডিআরবি'র বিচক্ষণ দলকে প্রস্তুত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। ঠিক যেভাবে এর আগেও তারা বাংলাদেশকে সহায়তা করেছেন এবং করছেন।
জঙ্গিবাদ ইস্যুতে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে সফল রাষ্ট্র উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ নির্মূলে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর চেয়ে ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। ভালো নির্দেশনা ও দক্ষতার জোরেই এ সাফল্য আমাদের ঘরে এসেছে। এখানে আবারও বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণতার প্রমাণ মিলেছে।
এছাড়া চিকুনগুনিয়া রোগ নির্মূলের ক্ষেত্রেও আইসিডিডিআরবি ব্যাপক অবদান রেখেছে এবং এভাবে কাজ করতে থাকলে ২০১৭ সালের ওয়ার্ল্ড হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাওয়ার্ডের মত নোবেল জয়ের সম্ভাবনাতেও আইসিডিডিআরবি থাকবে বলে মন্ত্রী মন্তব্য করেছে।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিডিডিআরবি'র নির্বাহী পরিচালক জন ডি ক্লিমেন্স, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ, আইসিডিডিআরবি'র ডেপুটি নির্বাহী পরিচালক সায়েদ মঞ্জুরুল ইসলাম, হাসপাতাল শাখার প্রধান আজহারুল ইসলামসহ আইসিডিডিআরবি'র বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
বক্তারা বলেন, আইসিডিডিআরবি এ পর্যন্ত ১২ হাজার গবেষণা করেছে এবং তার মধ্যে ৩৫০ টি মৌলিক গবেষণা বিশ্বজোড়া সমাদৃত হয়েছে। এ হাসপাতালে প্রতি বছর ৩২ কোটি টাকা ব্যয় হয় বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করতে গিয়ে। কিন্তু বর্তমান সময়ে আইসিডিডিআরবি'র স্থায়ী বেশকিছু ডোনারদের সরে দাঁড়ানোর কারণে আমরা কিছুটা সংকটে পড়তে যাচ্ছি। তাই অর্থ সংকুলান করাটা আমাদের জন্য একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরও আমরা ২০১৭ সালের ওয়ার্ল্ড হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছি।
বক্তারা আরও বলেন, ডায়রিয়া কলেরা ছাড়াও মা ও শিশুর চিকিৎসা সেবা, হৃদরোগসহ পরিবেশ বিপর্যয় ও নন কমিউনিকেবল রোগ নিয়ে সেবা ও গবেষণা করে আইসিডিডিআরবি। বাংলাদেশের সঙ্গে পঞ্চাশ বছরের অধিক সময় ধরে কাজ করতে করতে আইসিডিডিআরবি ব্যাপক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে এমনকি উত্তর কোরিয়ার যে অঞ্চলে অন্য রাষ্ট্রের কেউ যেতে পারেনি সেখানে আইসিডিডিআরবি গিয়ে স্বাস্থ্যসেবার কাজ করে এসেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৭
এমএএম/আরআই