সোমবার (০৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ১০ অক্টোবর থেকে ১৬ অক্টোবর এক বছরের বেশি ছয় লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গাকে এ কর্মসূচির আওতায় টিকা দেওয়া হবে। কর্মসূচির আওতায় প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার জনকে কলেরার টিকা দেওয়া হবে।
দ্বিতীয় রাউন্ডে ৩১ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ১-৫ বছর বয়সী সব রোহিঙ্গা শিশুকে (প্রায় দুই লাখ ৫০ হাজার) প্রথম ডোজ দেওয়ার দুই সপ্তাহ পর থেকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে। প্রতিবার এক ডোজ করে টিকা মুখে খাওয়ানো হবে।
মঙ্গলবার উখিয়া উপজেলায় কলেরার এ বিশেষ টিকাদান কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। এজন্য স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ কক্সবাজার যাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, উখিয়া উপজেলায় প্রতিদিন দেড়শ’টি দল কাজ করবে এবং দৈনিক ৭৫ হাজার জনকে টিকা খাওয়ানো হবে। আর টেকনাফে ৬০টি দল ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে টিকা খাওয়াবে। প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্র সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে আসা এসব নাগরিকদের মধ্যে নতুন ২৯ শতাংশ পাঁচ বছর বয়সী। ৬-১৭ বছর বয়সীর সংখ্যাও ২৯ শতাংশ। ১৮-৫৯ বছর বয়সী ৩৮ শতাংশ। আর ৬০ বা তার ঊর্ধ্বে ৪ শতাংশ। এদের মধ্যে ৩ শতাংশ (প্রায় ২০ হাজার) নারী গর্ভবর্তী আর শতকরা ৭ শতাংশ নারী শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান। ওই সব এলাকায় ১৬টি স্থায়ী স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান এবং ১২টি অস্থায়ী স্বাস্থ্য কেন্দ্র মিলিয়ে মোট ২৮টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র সেবা দিচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, এগুলোর মধ্যে দু’টি মেডিকেল কলেজ, দু’টি সদর হাসপাতাল, তিনটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, চারটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, একটি পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, চারটি কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ১২টি অস্থায়ীভাবে নির্মিত স্বাস্থ্য ক্যাম্প। এছাড়া সেনাবাহিনীর ১০টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রও সহযোগিতা করছে।
জাতিসংঘের সাতটি সংস্থা, ১৪টি আন্তর্জাতিক এবং ১৯টি দেশীয় এনজিও ছাড়াও ৪৩টি ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম ও ২১টি অ্যাম্বুলেন্স স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। এ পর্যন্ত চিকিৎসা কেন্দ্র এবং ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা দলের মাধ্যমে এক লাখ ২৪ হাজার ৮১৮ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা, ফাইলেরিয়া, কলেরা এবং এইচআইভি রোগের জন্য রোগতাত্ত্বিক জরিপ চালু করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই ব্যবস্থার ফলে ১৯ জন এইচআইভি রোগী ও ২১ জন যক্ষ্মা এবং ৬ জন ম্যালেরিয়ার রোগী সনাক্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, আইসিডিডিআরবি ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৭/আপডেট: ১৫২০ ঘণ্টা
এমআইএইচ/জেডএস