ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) এভাবেই নিজের আকুতি প্রকাশ করেন হেমানজিওমা’ রোগে আক্রান্ত শিশু মুক্তামণি।
নিজের কেবিনের বিছানায় শুয়ে শুয়ে মুক্তামণি বলতে থাকে, বাড়ি যাবো।
ঢামেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেন মুক্তামণির বাড়ি যাওয়ার বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, মুক্তামণির চিকিৎসা সম্পন্ন হয়নি। কিন্তু তার পরিবারের সদস্যরা বাড়ি যেতে চাইছে। তাই মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সে তার পরিবারের সঙ্গে বাড়ি যাবে। তাকে আমরা ফলোআপে রেখেছি। হাসপাতালে আবার আসতে হবে। তবে তার আর অস্ত্রোপচার দরকার নেই।
সবার কাছে দোয়া চেয়ে মুক্তামণির বাবা ইব্রাহীম বাংলানিউজকে বলেন, শুক্রবার সকালে মুক্তামণিকে নিয়ে বাড়ি যাবো। সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের মুদি দোকানি ইব্রাহীম হোসেনের মেয়ে মুক্তা। ইব্রাহীমের দুই জমজ মেয়ে ও এক ছেলে। যমজ মেয়ের মধ্যে হীরা বড় ও মুক্তা ছোট। জন্মের পরে দেড় বছর ভালোই ছিল মুক্তা। এরপর তার ডান হাতে ছোট মার্বেলের মতো গোটা দেখা দেয়। ক্রমেই তা বাড়তে থাকে। মুক্তার হাতটি দেখলে মনে হতো, গাছের বাকলের মতো ছেয়ে গেছে। আক্রান্ত হাতটি তার দেহের সব অঙ্গের চেয়েও ভারী হয়ে ওঠে। যন্ত্রণায় মুক্তা সব সময় অস্থির হয়ে থাকতো। তার সারাদেহে রোগ ছড়িয়ে পড়ে। শরীর শুকিয়ে যায়। শুধু হাতের ওজন বাড়তে থাকে। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে দেখানো হয় মুক্তাকে। কিন্তু কেউ সঠিক চিকিৎসা দিতে পারেনি। টাকার অভাবে গত ছয় মাস ধরে চিকিৎসাবিহীন অবস্থায় মুক্তাকে বাড়িতে রেখে কেবল ড্রেসিং করা হয়।
চলতি বছরের ১১ জুলাই মুক্তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে বার্ন ইউনিটের প্রধান প্রফেসর আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের টিম মুক্তামণির চিকিৎসা করছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৭
এজেডএস/জেডএম