২০৫০ সালের মধ্যে সমগ্র পৃথিবীর ৬৮ ভাগের বেশি মানুষ নগরে বসবাস করবে। তাই নগর স্বাস্থ্যের সঙ্গে জড়িত প্রভাবকগুলো খুব জটিল হবে।
সেক্ষেত্রে নগরের সুশাসন, জনসংখ্যার বৈশিষ্ট্য, প্রাকৃতিক পরিবেশ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন, সেবা এবং জরুরি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও খাদ্য নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়ে সকলকে আরও সচেতন হতে হবে।
শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশের স্বাস্থ্যবিদ, শিক্ষাবিদ, নীতিনির্ধারক, সরকারি প্রতিনিধি, বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের সদস্য এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের উপস্থিতিতে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে একটি সংলাপে এসব তথ্য উঠে আসে।
‘স্বাস্থ্যনীতি সংলাপ’ নামের এই অনুষ্ঠানটি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সমর্থিত আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর.বি) স্ট্রেংদেনিং হেল্থ, অ্যাপ্লায়িং রিসার্চ অ্যাভিডেন্স (শেয়ার) প্রকল্পের আওতায় ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম শুরু করা হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় আজকের এই সংলাপটির প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘বাংলাদেশের নগর স্বাস্থ্য ও সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা’।
স্বাস্থ্যনীতির এই সংলাপে বাংলাদেশের নগর স্বাস্থ্য ও সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো উঠে এসেছে। একইসঙ্গে এগুলোর বাস্তবধর্মী সমাধান খোঁজার প্রচেষ্টা করা হয়েছে। এই সংলাপের মাধ্যমে উঠে আসা সুপারিশমালা ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলে মনে করা হয়।
সংলাপে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কো অর্ডিনেশন অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টারের কো অর্ডিনেটর ড. মুশতাক হোসেন।
সঞ্চালনা করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।
সংলাপের মূল বক্তব্যে, আইসিডিডিআর.বি’র সহকারী বিজ্ঞানী ড. সোহানা শফিক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ ও ইনফরমেটিকস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. খালেকুজ্জামান দ্রুত নগরায়ণ এবং এ সম্পর্কিত স্বাস্থ্যঝুঁকি, নগরস্বাস্থ্যে বিদ্যমান বৈষম্য এবং নগরে মহামারী ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
তারা নগর এলাকায় দরিদ্রদের জন্য সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে আলোচনা করেন এবং স্বাস্থ্যখাতে জড়িত সকল প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ফার্স্ট সেক্রেটারি মিস বসে তার বক্তব্যে স্বাস্থ্যের সামাজিক প্রভাবকগুলো এবং সকল নীতিতে স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন।
সমাপনী বক্তব্যে ‘স্বাস্থ্যনীতি সংলাপ’র সভাপতি অধ্যাপক ডা. টিএ চৌধুরী নগর স্বাস্থ্য উন্নয়নের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত নেতৃত্বের মাধ্যমে অন্যান্য মন্ত্রণালয়, এনজিও ও সকল সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নির্দিষ্টকরণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের কার্যকর অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে সুনির্দিষ্ট আলোচনা আয়োজনের প্রস্তাব করেন।
এছাড়া সংলাপে অংশগ্রহণকারী স্বাস্থ্যবিদ, শিক্ষাবিদ, নীতিনির্ধারক, সরকারি প্রতিনিধি, বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের সদস্যরা তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং নগর স্বাস্থ্য উন্নয়নের ক্ষেত্রে সুপারিশমালা নিয়ে আলোচনা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৮
এমএএম/টিএ