ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ডেঙ্গু শনাক্তের ব্যবস্থা নেই মুন্সিগঞ্জ হাসপাতালে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০২ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৯
ডেঙ্গু শনাক্তের ব্যবস্থা নেই মুন্সিগঞ্জ হাসপাতালে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল। ছবি: বাংলানিউজ

মুন্সিগঞ্জ: ডেঙ্গু চিহ্নিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেই মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে। ছয়টি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও নেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। এতে করে রোগীরা পড়েছেন বিপাকে। কয়েকটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ওপর সাধারণ রোগীদের নির্ভরশীল হতে হচ্ছে। ফলে বেশিরভাগ রোগী ঢাকামুখী হচ্ছেন। 

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে চিকিৎসা পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়েই চিন্তায় আছেন মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার সাখাওয়াত হোসেন।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমি নিজেও জ্বরে আক্রান্ত।

পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছি ডেঙ্গু কিনা। এখন গুজব কিনা এর জন্য বসে থাকলে হবে না। এই সময়ের জন্য টেস্ট করানো বুদ্ধিমানের কাজ। আমি ডাক্তার কিন্তু আমিও চিকিৎসা পাবো কিনা এটা নিয়ে টেনশনে আছি। আমরা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি, আমরাও আক্রান্ত হয়ে যেতে পারি।  

মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে ৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন এবং একজন রোগীকে শুক্রবার (২৬ জুলাই) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।  

মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার সাখাওয়াত হোসেন আরও জানান, এবারের ডেঙ্গু বিগতবারের থেকে আলাদা। জ্বর কিংবা র‌্যাশ দেখে বোঝা যায় না। আমরা চিকিৎসকরা সতর্ক অবস্থানে আছি। যতটুকু চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব ততটুকু দিয়ে যাচ্ছি। নিয়মিত হাসপাতাল পরিষ্কার করা হচ্ছে। ভর্তিকৃত রোগীদের মশারি সরবরাহ করা হচ্ছে। রোগীরাও যেন এ বিষয়ে সচেতন হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।  

শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সৈয়দ রেজাউল ইসলাম জানান, ডেঙ্গু চিহ্নিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা এখানে নেই। শ্রীনগরে বেসরকারিভাবে এই পরীক্ষা করা হয়ে থাকে।  
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম জানান, ডেঙ্গু চিহ্নিত করার জন্য এন্টিজেন পরীক্ষা এনএস-১ এখানে নেই। উপজেলা পর্যায়ে এখনো এই পরীক্ষাটি নেই। কেউ আক্রান্ত হলে ঢাকা ছাড়া শনাক্ত করার উপায় নেই। তবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কেউ ভর্তি নেই বলে জানান তিনি।

মুন্সিগঞ্জ ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সভাপতি আক্কাস আলি মোল্লা জানান, এন্টিজেন পরীক্ষাটির জন্য এক হাজার টাকা নেওয়া হয়ে থাকে। একটি ডিভাইস আছে, যা দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। অনেক ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই এই পরীক্ষাটি করা হয়ে থাকে। রেনেসাঁ ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ৫-৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।  

মুন্সিগঞ্জ সিভিল সার্জন শেখ ফজলে রাব্বি জানান, ডেঙ্গু চিহ্নিত করার জন্য তিনটি পরীক্ষা চিকিৎসকরা করে থাকেন। এর মধ্যে সিবিসি ও প্লাটিলেট পরীক্ষা মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে করা হয়। কিন্তু এন্টিজেন (এনএস-১) পরীক্ষার মাধ্যমে ডেঙ্গু পজিটিভ কিনা এটি চিহ্নিত করা হয়। এই পরীক্ষাটি জেলার সরকারি হাসপাতালে নেই। বেসরকারিভাবে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এন্টিজেন পরীক্ষা করা হয়। সিবিসি ও প্লাটিলেট পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা হয় প্লাটিলেট কমে গেছে কিনা।

তিনি আরও জানান, ছয়জন ডেঙ্গু রোগী এসেছিল চিকিৎসা নেওয়ার জন্য। সেখান থেকে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং বাকিরা মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। ডেঙ্গু রোগীদের সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। জেলার পাঁচটি উপজেলায় বর্তমানে কোনো ডেঙ্গু রোগী নেই।  

তিনি আরও জানান, জেনারেল হাসপাতালে যে কয়জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন তারা কেউই এই এলাকায় আক্রান্ত হননি। সবাই ঢাকা এবং অন্য জায়গা থেকে আক্রান্ত হয়ে এখানে এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।