ঢাকা: ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নতুন ভবনের করোনা ইউনিট ছাড়া সব বিভাগে রোগীর সংখ্যা কমে গেছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া এবং সাধারণ রোগীদের ছাড়পত্র দেওয়ায় হাসপাতালটিতে খালি পড়ে আছে অনেক বেড।
হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে করোনা আক্রান্ত শনাক্তের হার বেড়ে যাওয়া এবং লকডাউনের কারণে সাধারণ রোগীদের ছাড়পত্র দেওয়ার জোয়ার চলছে।
রোববার (৪ মার্চ) বিকেলে করোনা ইউনিট ছাড়া হাসপাতালের নিউরোসার্জারি, গাইনি, অর্থোপেডিক্স ও শিশু বিভাগে গিয়ে দেখা যায় একের পর এক সিট খালি হয়ে গেছে। অথচ কয়েকদিন আগেও সিট তো দূরের কথা হাসপাতালের ফ্লোরেও জায়গা পেতে হিমশিম খেতে হয়েছে রোগীদের।
হাসপাতালের গাইনি বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে ও লকডাউনের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে রোগীদের ছাড়পত্র দেওয়ার হিড়িক পড়েছে হাসপাতালে।
তবে চিকিৎসকরা বলছেন, যাদের পরে অস্ত্রোপচার করা যাবে এবং বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া যাবে কেবল তাদেরই ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে।
সূত্রটি আরও জানায়, গত বছরও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকেই ঢামেক হাসপাতালে রোগীশূন্যতা তৈরি হয়। শুধু গুরুতর রোগীদের ভর্তি নেওয়া হতো। এই বছরও একই হাল হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।
পায়ুপথের সমস্যাজনিত কারণে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম থেকে আসা হাকিম মিয়াকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ২১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ১৪ নম্বর বেডে ভর্তি করেন তার পরিবারের সদস্যরা। ভর্তির সময় চিকিৎসকরা বলেছিলেন, তার অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। কিন্তু রোববার বিকেলে তাকে চিকিৎসকরা ছাড়পত্র দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে রোগীর ভাই কাশেম মিয়া বলেন, চিকিৎসকরা এখন বলছেন তাকে এক মাসের ওষুধ দেওয়া হয়েছে। ওষুধেই ভালো হয়ে যাবে। যদি ভালো না হয়, তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে আবার হাসপাতালে নিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছেন।
ঢামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ওয়ার্ডমাস্টার রিয়াজ বলেন, প্রতিদিন রোগীদের ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে এবং প্রতিদিনই রোগী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। রাতের বেলায় কোনো রোগী এলে তাদের ভর্তিতে সমস্যা হয়। তখন সিট খালি থাকে না। তবে খুব গুরুতর রোগীদের ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়।
ডায়েটিশিয়ান বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, পুরাতন ভবনে সাধারণ রোগীর সংখ্যা এখন কম। গত কয়েকদিন আগেও অনেক রোগী ছিল।
এ ব্যাপারে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে সে কারণে অন্য বিভাগের রোগীরা হাসপাতালে তেমন আসছেন না। এছাড়া যেসব রোগী বাসায় গিয়ে চিকিৎসা নিলে হবে তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২১
এজেডএস/এমজেএফ