ঢাকা: টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সফলতা পেতে হলে মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিতে হবে। জাতীয় স্বাস্থ্য নীতিতে গুরুত্বসহকারে মানসিক স্বাস্থ্যকে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন।
সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টের উদ্যোগে ‘মানসিক স্বাস্থ্য: করোনার প্রভাব’ শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল টকশোতে বক্তারা এই তাগিদ দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক এসএম আব্দুল্লাহ বলেন, এমডিজি (সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) অর্জনে বাংলাদেশের যেমন সফলতা রয়েছে সেভাবে এসডিজি (টেইসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) অর্জনের সফলতা পেতে হলে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যকে আঞ্চলিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। সার্বিক স্বাস্থ্যখাতের বাজেটের সাথে মানসিক স্বাস্থ্যখাতকেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে। করোনাকালীন সময়ে মানসিক সমস্যা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যকে যুক্ত এবং স্বাস্থ্যনীতিতে মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিয়ে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন।
রায়েরবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুন্নেছা বলেন, দীর্ঘদিন পর বিদ্যালয়গুলো সীমিত পরিসরে চালু হয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের যাতে অতিরিক্ত চাপ দেওয়া না হয় সেদিকে সরকার এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা লক্ষ্য রাখছেন। শিশুদের মানসিক সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য খেলাধুলায় আগ্রহী করে তোলা, সিলেবাস কমিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও চিত্ত বিনোদনের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে হবে। এছাড়াও বাগান করা, ধর্মীয় চর্চা এবং বিদ্যালয়ে এসে বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশার মাধ্যমে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার সুযোগ করে দিতে হবে।
অভিভাবক প্রতিনিধি আনোয়ারা খাতুন প্রভাতী বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিকে আমাদের দেশে নেতিবাচকভাবে দেখা হয়। এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। করোনার শুরুতে শিশুরা অনলাইন ক্লাসে মনোযোগী হলেও পরবর্তীতে অমনোযোগী হয়ে পড়ে। এ সময় শিশুরা বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং বাইরে ঘুরতে যেতে না পারার কারণে আবদ্ধ অবস্থায় এক ধরনের মানসিক চাপে ছিল। ফলে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর চাপ বৃদ্ধি পায়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে শিশুদেরকে বই পড়া, বাগানের কাজে এবং খেলাধুলার মাঝে ব্যস্ত রেখে মানসিক চাপ থেকে দূরে রাখা সম্ভব। এছাড়াও প্রতিটি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাউনন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা থাকা দরকার।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট্রের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঙ্গে জলাধার, বনাঞ্চল, উন্মুক্ত, গণপরিসর তথা সার্বিক পরিবেশের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তথাকথিত উন্নয়নের পরিবর্তে প্রাণ প্রকৃতি ও সব বয়সী মানুষের কথা বিবেচনায় রেখে পরিকল্পনা ও রাষ্ট্রিয় পলিসিগুলো প্রণয়ন করতে হবে। চিকিৎসার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে প্রাধান্য দিয়ে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠন এখন সময়ের দাবি। মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করে সংকট মোকাবেলায় বিভিন্ন বয়সী মানুষকে সক্ষম করে তুলতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০১ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১
ইইউডি/এমজেএফ