ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ডায়াবেটিসকে প্রতিহত করা সম্ভব, আপনি করেছেন কি?

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২১
ডায়াবেটিসকে প্রতিহত করা সম্ভব, আপনি করেছেন কি? ...

ঢাকা: ডায়াবেটিস চারটি প্রধান অসংক্রামক রোগের মধ্যে একটি, যা বিশ্বব্যাপী অসুস্থতা এবং মৃত্যুহারে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে। বাংলাদেশে শহর ও গ্রামাঞ্চল উভয় ক্ষেত্রেই ডায়াবেটিসের প্রকোপ বাড়ছে।

আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ৭.১ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিস নিয়ে বসবাস করছে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হবে বলে অনুমান করা হয়েছে। দেশে ডায়াবেটিস রোগীদের এই ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধির হার বিবেচনা করে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সানোফি বাংলাদেশ 'বাংলাদেশে ডায়াবেটিস: বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা' শীর্ষক বৈজ্ঞানিক সেমিনারের আয়োজন করেছে।

সেমিনারে জানানো হয়, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ক্ষেত্রে আমাদের অনেক তরুণ গবেষক আছেন, যারা নিজ নিজ চিকিৎসা ক্ষেত্রে মুল্যবান অবদান রাখার পাশাপাশি বৈশ্বিক ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনা বাস্তুতন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। তাই, বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস ২০২১-এর প্রাক্কালে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সানোফি বাংলাদেশ ডায়াবেটিস ক্ষেত্রে শীর্ষ তরুণ গবেষকদের সংবর্ধনা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মটি শুধুমাত্র তরুণ গবেষকদের তাদের কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের জন্য স্বীকৃতি দেয় না বরং প্রতিশ্রুতিশীল গবেষকদের ডায়াবেটিসের মত চ্যালেঞ্জিং ক্ষেত্রে আরও বেশি বেশি কাজ করার জন্য উৎসাহিত করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক, জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলাদেশের ডায়াবেটিস সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খান। বারডেম জেনারেল হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের অধ্যাপক মো. ফারুক পাঠানের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক জাফর এ লতিফ এবং মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম।

সেমিনারে উপস্থিত বিশেষজ্ঞদের প্যানেলে বিশেষজ্ঞ মতামত উপস্থাপন করেন ডায়াবেটিস ক্ষেত্রের বিশিষ্ট চিকিৎসকরা।

ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল ও গবেষণা কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটির সভাপতি প্রফেসর ড. এসএম আশরাফুজ্জামান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক প্রফেসর ড. মো. আবুল হাসানাত, ন্যাশনাল হেলথ কেয়ার নেটওয়ার্কের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. এম এ সামাদ, ইউনাইটেড হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. হাফিজুর রহমান বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক মো. ফারুক পাঠান বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের ১০তম ডায়াবেটিস প্রবণ দেশ এবং বাস্তব পরিস্থিতি এর চেয়েও গুরুতর। এখনই ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। সর্বস্তরের সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা এবং ডায়াবেটিক রোগীর সেবায় সুলভে ঔষধ সরবরাহ থেকে শুরু করে অন্যান্য সহযোগী ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা খুবই প্রয়োজন।

এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সেরা ৫ বিজয়ী গবেষকের নাম ঘোষণা করা হয়। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর ২০২১ সালের মধ্যে গবেষকেদের প্রকাশনার ভিত্তিতে বিজয়ীদের নির্বাচন করা হয়। অনুষ্ঠানে জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান, অধ্যাপক মো. ফারুক পাঠান এবং অধ্যাপক জাফর এ. লতিফ বিজয়ীদের সংবর্ধনা দেন।

বিজয়ীরা হলেন- ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের এন্ডোক্রিনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান ড. এ.বি.এম. কামরুল হাসান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাহজাদা সেলিম, মার্কএস মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এন্ডোক্রিনোলজি এবং মেটাবলিজম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. নাজমা আক্তার, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার ড. সুমন রহমান চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের এন্ডোক্রিনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান ড. ফারহানা আক্তার।

বিজয়ীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, রিসার্চ করার জন্য প্রয়োজন সূক্ষ্ম বিশ্লেষণী ক্ষমতা এবং স্বচ্ছ চিন্তাধারা। ছাত্ররা রিসার্চে উৎসাহিত হচ্ছে এটা অনেক আনন্দের বিষয়। তিনি আরও বলেন, মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে কিন্তু এটাকে কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে না। জীবনধারার পরিবর্তন জরুরি কিন্তু কেউ করছে না। কীভাবে বললে মানুষ অনুপ্রাণিত হবে সেই সম্পর্কে আরও ভাবতে হবে।

সবশেষে তিনি বলেন, ডায়াবেটিস-কে প্রতিহত করা সম্ভব। আপনি করেছেন কি?

এই একটি লাইনের মাধ্যমে অধ্যাপক খান প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ গবেষকদের চ্যালেঞ্জ করেন যাতে তারা এই ক্ষেত্রে আরও অধিক মননিবেশ করেন আর তবেই আমাদের দেশ এবং রোগীরা সামনের দিনগুলোতে সুচারুরূপে ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনা করতে পারবে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালক (মেডিক্যাল অ্যাফেয়ার্স) ডা. মাহমুদ আবেদিন খান এবং হেড অফ বিজনেস এ বি এম আশরাফুল আলম।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২১
এমআইএইচ/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।