ঢাকা: আগামী বছর দেশে কোভিডের টিকা উৎপাদন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
সালমান এফ রহমান বলেন, ভারত থেকে আমরা সর্বপ্রথম সবচেয়ে কম দামে টিকা আমদানি করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী উদ্যোগের ফলে বিশ্বের অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে আমরা দ্রুত টিকা পেয়েছি। ভারত টিকা উৎপাদন শুরু করার আগেই আমরা অগ্রিম টাকা দিয়েছি। এটি আমাদের জন্য ঝুঁকি ছিল। তাদের দেশে পরিস্থিতি খারাপ হয়ে গেলে টিকা পেতে দেরি হয়। তবে আগামী মাসে ভারতের সঙ্গে আমাদের যে চুক্তি আছে সেটির আরেকটি চালান পাওয়া যাবে। আর আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকে চুক্তির সব টিকা পাওয়া যাবে বলে আশা করি।
টিকা উৎপাদন বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইনসেপ্টা চীনের একটি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করছে। ইনসেপ্টার কাছে চায়না যে বিশেষ ধরনের টিকা বানায় সেটি তাদের বানানোর সক্ষমতা আছে। তাদের সঙ্গে চীনের টার্ম অ্যান্ড কন্ডিশন চূড়ান্ত হলেই টিকা উৎপাদন শুরু করতে পারবে। একই সঙ্গে বেক্সিমকোও টিকা উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু করেছে। আশা করি আগামী চার থেকে ছয় মাসের মধ্যে আমরাও টিকা উৎপাদনের কার্যক্রম শেষ করতে পারবো। বেসরকারিভাবে ইনসেপ্টা ও বেক্সিমকো কাজ করলেও আরও কয়েকটি কোম্পানি টিকা উৎপাদন নিয়ে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীও এ বিষয়ে আন্তরিক। তিনিও চান দেশে টিকা উৎপাদন হোক। এজন্য যে কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সালমান এফ রহমান বলেন, করোনা মহামারির বর্তমান অবস্থায় আগামী এক থেকে দুই বছর টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। টিকা দেওয়ার পরও এখনো করোনা ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। ফলে আলোচনায় আসছে বুস্টার টিকা দেওয়ার। সে বিষয়টিও আলোচনায় আছে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগ এ উপদেষ্টা বলেন, জ্বালানি তেলের দামের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেও বলেছেন। তবে আমার মনে হয়ে এটি কমে আসবে। দাম কমে আগের পর্যায়ে না গেলেও এটি কমবে।
তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে যে শুধু পরিবহনের ভাড়া বেড়েছে তা কিন্তু নয়। শিপিংয়ের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। শিপিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত কন্টেনার পরিবহনেও খরচ অনেক বেড়েছে।
পুঁজিবাজার নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমাদের দেশের পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী নেই বললেই চলে। এখানে যে লেনদেন হয় তার ৮০ শতাংশ আসে রিটেল বা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে। বাকি ২০ শতাংশ আসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে। কিন্তু উন্নত বিশ্বের পুঁজিবাজারের চিত্র পুরো উল্টো। আমাদের পুঁজিবাজার ইক্যুইটি বেইস। এখানে বন্ড মার্কেট নেই। বন্ড মার্কেটের উন্নয়নে আমরা কাজ করছি। বর্তমান চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা এ বিষয়ে আন্তরিক। আশা করা যায়, বন্ড মার্কেট জনপ্রিয় হলে পুঁজিবাজারে চাঙ্গা হবে।
সালমান এফ রহমান বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া হওয়ার পর থেকে আমাদের দায়িত্বটা বেড়ে গেছে। অনলাইনে ভুল তথ্য গেলে ডিফরেন্ট ইমপ্যাক্ট চলে আসে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বিশ্বে অনেক দেশ আইনটি করেছে। এটার প্রয়োজন আছে। তবে এর অপব্যবহার আমরা চাই না।
মিট দ্য রিপোর্টার্সে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউ’র সভাপতি মুরসালিম নোমানী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ডিআরইউ’র সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২১, আপডেট: ১৫১৮ ঘণ্টা
এসএমএকে/আরবি