ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

মেদিনীপুরে ওরশ উৎসবে যোগ দিলেন বাংলাদেশিরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৪
মেদিনীপুরে ওরশ উৎসবে যোগ দিলেন বাংলাদেশিরা

কলকাতা: যুগাবতার হযরত সৈয়েদোনা সৈয়দ শাহ মেহের আল কাদেরির ১২৩তম ওরশ উপলক্ষে বাংলাদেশিরা এসেছেন পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুরে জোড়া মসজিদে।  

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজবাড়ী থেকে স্পেশাল ট্রেনে করে স্থানীয় সময় ভোর ৫টার দিকে মেদিনীপুর স্টেশনে পৌঁছেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।

ট্রেনটি দর্শনা হয়ে ভারতের গেদে সীমান্ত পার করে রানাঘাট, দমদম, খড়গপুর হয়ে মেদিনীপুরে এসেছে।  

এবার স্পেশাল ট্রেনে এসেছেন ২ হাজার ২৫৬ জন বাংলাদেশি। তার মধ্যে পুরুষ ১ হাজার ৩১৯ জন, নারী ৮৫৩ জন ও শিশু রয়েছে ৮৪ জন। স্টেশনে পৌঁছামাত্র তাদের স্বাগত জানিয়েছে মেদিনীপুর পৌরসভার সৌমেন খানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। উপস্থিত বাংলাদেশিরাও ভারতীয় রেলের এ আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।  

পৌরসভার তথ্য মতে, ওরশ উপলক্ষে ৯ হাজারের বেশি বাংলাদেশি অবস্থান করছেন মেদিনীপুরে জোড়া মসজিদের সামনে। যদিও মূল অনুষ্ঠানটি হয়ে থাকে ১৭ ফেব্রুয়ারি।

প্রতিবছর এ উৎসবে ভারত, বাংলাদেশ ছাড়াও অন্যান্য দেশের লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি জমায়েত হন মেদিনীপুরে। তবে সব থেকে বেশি সংখ্যক মানুষ আসেন বাংলাদেশ থেকে। ১৯০২ সাল থেকে ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে স্পেশাল ট্রেন আসে মেদিনীপুরে। বাংলাদেশিদের একত্রিত করে ওরশ কমিটি আঞ্জুমান-ই-কাদেরিয়া।

আঞ্জুমান-ই-কাদেরিয়ার সভাপতি মাহাবুল আলম বলেন, ১৯০২ সাল থেকে এ বিষয়ে মৈত্রীর সম্পর্ক আজও অটুট রয়েছে দুদেশের। তিনদিনের এ সফর শেষে ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার দিকে একই ট্রেনে ফিরে যাবেন বাংলাদেশিরা। তবে ট্রেন ছাড়াও বাস-প্লেনে অনেক বাংলাদেশি আসেন এ সময়টায়।  

মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রতিবারই বাংলাদেশ থেকে আসা সমস্ত পুণ্যার্থীদের জন্য অভ্যর্থনা জানানোর ব্যবস্থা থাকে। একই সঙ্গে পুণ্যার্থীরা উৎসবে শামিল হওয়ার পুরো সময়টা তাদের দেখভালের ব্যবস্থাও করে থাকে মেদিনীপুর পৌরসভা।

অবিভক্ত বাংলার শেষ প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ হাসান সুরাবর্দি জন্মগ্রহণ করেছিলেন এ মেদিনীপুর শহরে। একদিকে ধর্মীয় লোক ঐতিহ্য। অন্যদিকে ইতিহাস সমৃদ্ধ শহরের মাটি দুই বাংলার মানুষের কাছে ওরশের সময় হয়ে ওঠে আত্মিক উৎসবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুর, পাবনা, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী থেকে যোগ দেন এ ওরশে। দুই বাংলার মুসলিমরা জোড়া মসজিদে তাদের ধর্মীয় আচারগুলোর প্রতিপালন করেন। গোটা মেদিনীপুর শহর ঘুরে বেড়ান।

এখান থেকে তারা কিনে নিয়ে যান মাদুর, অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ি, কড়াই, গামলা, কম্বল, ব্যাগ, বড় বড় ব্যারেল ইত্যাদি। আর বিক্রি হয় মনসুরা, আঙুরের মোরব্বা, আগ্রা মোরব্বা, আনারস, মসুর পাক, করাচি হালুয়া, স্পেশাল খোয়া বরফি, গাজর হালুয়া, সোহান হালুয়া, বোম্বে হালুয়া, মিহিদানা, তিলের নাড়ু, ক্ষীরের গজা, পাপড়ি ইত্যাদি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৪
ভিএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।