ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

উপনির্বাচনের ফলাফলে পশ্চিমবঙ্গে আরও শক্তিশালী মমতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২৪
উপনির্বাচনের ফলাফলে পশ্চিমবঙ্গে আরও শক্তিশালী মমতা

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের চার বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনের ফল যেন মমতাকে আরও শক্তিশালী করে দিল। রাজ্যের রায়গঞ্জ, বাগদা, রানাঘাট দক্ষিণ এবং উত্তর কলকাতার মানিকতলা—এই চার বিধানসভা আসনে উপনির্বাচনে জয় পেয়েছে তৃণমুল।

ফলাফল তৃণমূল ৪, বিজেপি শূন্য।

ফলে ২০২৬ সালের রাজ্যের বিধানসভা ভোটের আগে দল গুছিয়ে নিতে বড় সুযোগ পেয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেকটাই জমি মজবুত হলো বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

বিশ্লেষকদের মতে, বাম জামানার শেষ সময়ে বাংলায় দিশা দেখিয়েছিল মমতার দল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু শত দুর্নীতি থাকলেও তৃনমূলের উপরই ভরসা রাখতে হবে বাংলার মানুষকে। কারণ, এই মুহূর্তে তার বিকল্প কোনো দল বাংলায় নেই বললেই চলে। যদিও গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী দলের আসন দখল করতে পেরেছে। তবুও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ২০২১ সালে বিজেপির একটা সাময়িক হাওয়া ছিল। কিন্তু বিজেপি বাংলার হাল ধরবে, এখনও পায়ের তলায় সেই জমি শক্ত হয়নি।

সাধারণ রাজ্যবাসী মনে করছেন, বাংলার রাজনীতি আর কলকাতার আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস এখন প্রায় সমান। কোনোটাই আর মেলে না। এমন মনে করার কারণ, সম্প্রতি শেষ হয়েছে ভারতের লোকসভা নির্বাচন। সেখানে সমীক্ষাগুলো (এক্সিট পোল) জানান দিচ্ছিল, একক ক্ষমতায় কেন্দ্রে বিজেপি আসছে এবং বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের পতন একপ্রকার অনিবার্য। কারণ, লোকসভা ভোটে যদি বাংলা থেকে বিজেপি ২৫-২৬টি আসন পেত তাহলে দল ধরে রাখত পারত না মমতা। চরম সম্ভবনা থাকত বাংলার সরকার পড়ে যাওয়ার। ফলে লোকসভা ফলাফলের আগে চরম অনিশ্চিতার মধ্যে ছিল মমতার দল। একইভাবে গোটা আষাঢ় মাস শেষ হয়ে শ্রাবণ আসার পালা। কিন্তু কলকাতায় ফকফকা রোদ। ফলে দুই পূর্বাভাস সমান বলেই মনে করছেন বঙ্গবাসী।

শনিবার (১৩ জুলাই) পশ্চিমবঙ্গের উপনির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে বিজেপিকে আরও হতাশ করল এই ফল। বাংলায় যে চারটি আসনে উপনির্বাচন হয়েছিল, তারমধ্যে তিনটে ছিল বিজেপির দখলে। সবকটিই তাদের হাতছাড়া হলো। তবে এই উপনির্বাচনে সুফল পাওয়ার একাধিক কারণও রয়েছে। লোকসভা ভোটের পর থেকে গত প্রায় একমাস সময়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠকে যেভাবে নিজের দলকেই বকাঝকা শুরু করেছিলেন, এমনকি পুলিশ, আমলা, মন্ত্রীও বাদ পড়েননি। প্রকাশ্যে প্রশাসনের একাংশকে লোভী বলতেও দ্বিধা করেননি মুখ্যমন্ত্রী।

তাতে একঢিলে দুটি ব্যাপার পরিষ্কার করতে পেরেছেন নেত্রী। প্রশাসন এবং দল দুটোই নড়েচড়ে বসেছিল। এর মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, তিনিই শেষ কথা। অর্থাৎ তিনিই শাসক এবং তিনিই-ই বিরোধী। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই যদি তৃণমূলের একাংশের সমালোচনা করেন, তাহলে বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দুদের হাতে কী পড়ে থাকে?

ফলে মমতার কৌশলে ফের পরাস্ত বিরোধীরা। যার জেরে উপনির্বাচনের ৪:০ ফলাফল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরও শক্তিশালী করে দিল। আপাতত বাংলায় শক্তিশালী বিরোধী দল বলে কিছু থাকল না। পাশাপাশি ২০২৬ সালে বিধানসভা ভোটের আগে দল ও সরকার গুছিয়ে নিতে বড় সুযোগ পেয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২৪
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।