আগরতলা (ত্রিপুরা): ভারত সরকারের গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যে ছিটমহল নিয়ে সমস্যা ছিল স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করেছেন। এর ফলে বাংলাদেশ এবং উত্তরপূর্ব ভারত উপকৃত হয়েছে।
শনিবার(২১ ডিসেম্বর) ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় এসে এই অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
আগরতলায় প্রথম বারের মতো শুরু হয়েছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৭২তম প্লেনারি সেশন। দুদিনব্যাপী এই সেশন উপলক্ষে প্রথমদিন শনিবার একাধিক জায়গায় একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকের সভাপতিত্ব করছেন অমিত শাহ। এছাড়াও রয়েছেন ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিনন্ধিয়া, উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারসহ উত্তরপূর্ব ভারতের আটটি রাজ্যের রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
এই উপলক্ষে এদিন আগরতলার একটি বেসরকারি হোটেলে উত্তর-পূর্বাঞ্চল ব্যাংকার্স কনক্লেভ -২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়। নর্থ-ইস্ট ডেভেলপমেন্ট ফিনান্স কর্পোরেশন লিমিটেডের (নিডফি) উদ্যোগে হয় এই কনক্লেভ।
মূলত দুই পর্বে এই কনক্লেভ অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম পর্বে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নতির বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন নিডফি’র চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর পি ভি এস এল এন মূর্তি, রাজ্য সরকারের অর্থ সচিব এম নাগা রাজুসহ বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। এখানে উত্তরপূর্বের বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হয় এবং নিডফি'র কাজ কর্মের বিষয়ে নির্মিত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
দ্বিতীয় পর্বে আয়োজিত এই কনক্লেভে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় অমিত শাহ। তিনি বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ভারতের জিডিপি যেখানে ৮ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে সেখানে উত্তরপূর্ব ভারতের জিডিপি ১১ থেকে ১২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দীর্ঘ বছর উত্তর-পূর্বাঞ্চল উপেক্ষিত ছিল কিন্তু বিজেপি সরকার কেন্দ্রের ক্ষমতায় আসার পর উত্তরপূর্ব ভারতের উন্নয়নের জন্য একের পর এক কাজ করে যাচ্ছে। এরই ফলস্বরূপ সারা দেশের তুলনায় এখন উত্তর-পূর্বাঞ্চল এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়েও তিনি আশাবাদী। এই বিষয়ে অমিত শাহ বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বেশ কিছু ছিটমহল ছিল। এই ছিটমহলগুলোর জন্য উভয় দেশের মধ্যে নানা সমস্যা হচ্ছিল। ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সংবিধান সংশোধন করে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করেছেন। এর প্রেক্ষিতেই বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে উত্তরপূর্ব ভারতের উৎপাদিত পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন উত্তর পূর্বাঞ্চল লাভবান হচ্ছে তেমনি বাংলাদেশেরও অনেক আর্থিক সুবিধা হচ্ছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
এই অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা, অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী প্রেমাখাণ্ডুসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
এসএএইচ