ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ভারত

বাংলার পর গোয়া দখলের গুটি সাজাচ্ছেন মমতা

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২১
বাংলার পর গোয়া দখলের গুটি সাজাচ্ছেন মমতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা: তিন তিনবার বাংলায় ক্ষমতা ধরে রাখার পর ভারতের ছোট ছোট রাজ্যগুলো দখল করাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজর। কারণ, ভারতে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে অন্যতম প্রধানমন্ত্রীর দাবিদার তিনিই।

সেই মতে গুটিও সাজাচ্ছেন তিনি। ফলে আসাম, ত্রিপুরার সঙ্গে ভারতের গোয়া রাজ্যের বিধানসভা ভোটে ক্ষমতা দখলের দিকে এগোচ্ছে মমতার দল। সেই কারণে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং সফর থেকে বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দর হয়ে সরাসরি গোয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।

বছর পার হলেই গোয়ায় বিধানসভা ভোট। আরব সাগরের তীরে ছোট এই রাজ্যটিতে বিজেপি বধে মরিয়া মমতার দল। সেই উদ্দেশ্যে তলে তলে চলছে গুটি সাজানোর প্রক্রিয়া। সেখানে পৌঁছে গেছেন বাবুল সুপ্রিয়সহ মমতার একাধিক সাংসদ সদস্যরা। সে রাজ্যের রাজনৈতিক জমি খতিয়ে দেখেছেন মমতার ভোট কূশলী পিকে অর্থাৎ প্রশান্ত কিশোর। পিকের ওপর চরম আস্থা রেখেছেন মমতা। কারণ, এবারের প্রবল মোদী ঝড়ের মধ্যে 'বাংলা' মমতা হাতে তুলে দিয়েছেন পিকে।

এর আগে, গুজরাতে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া এবং ২০১৪ দিল্লি দখলে মোদীকে সহযোগিতা করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। পাশাপাশি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারসহ অনেকে পিকের স্ট্র্যাটেজি কাজে লাগিয়ে ক্ষমতা ধরে রেখেছে। এমনকি, ২০১৯ সালে মমতার থেকে প্রশান্তকে ধার নিয়ে ক্ষমতা ধরে রেখেছে দিল্লির আমআদমি পার্টির সুপ্রিমো মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।  

২০১৯ সাল থেকে মমতার সঙ্গে কাজ করছেন প্রশান্ত। তবে, সেবার লোকসভা নির্বাচনে ব্যর্থ হয়েছিলেন ওই ভোট কূশলী। বাংলার ৪২টি আসনের মধ্যে ১৮টি দখল পায় বিজেপি। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনে নিরাশ করেননি মমতাকে। ফলে আসাম, ত্রিপুরা, গোয়া ওই তিন রাজ্যে মমতা হয়ে গুটি সাজাচ্ছেন প্রশান্ত কিশোর।

সম্প্রতি গোয়ার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মমতা দলে যোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি মমতাকে সমর্থন জানিয়েছেন ওই রাজ্যের নির্দল বিধায়ক।  

কথা চলছে বিভিন্ন দলের অনেক নেতাকর্মীদের সঙ্গেও। সবমিলিয়ে গোয়াতে ‘খেলা হবে’র ডাক দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে, সে রাজ্যে দীর্ঘমেয়াদি খেলার পক্ষে মমতা। তাই একা নয়, বিরোধী শক্তিকে একজোটে করে বিধানসভা নির্বাচন লড়াইয়ের তোড়জোড় করছে মমতার দল।

জোর গুঞ্জন রয়েছে সেখানে ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দিতে পারে গোয়া বিজেপি সরকারের একদা জোট সঙ্গী ‘গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি’। দলটির প্রধান বিজয় সারদেশাইয়ের সঙ্গে কথা বলতেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। বিজয়ের সঙ্গে একপ্রস্থ কথা সেরে ফেলেছেন প্রশান্ত কিশোর। সারদেশাইয়ের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন প্রশান্ত। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীও তাকেই করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সে উদ্দেশ্যেই বৃহস্পতিবার রওয়ানা দিচ্ছেন মমতা। তিন দিনের সফরে রয়েছে একাধিক কর্মসূচি।

তবে প্রশ্ন, বিজয় কী মমতার প্রস্তাব মেনে নেবেন? এখন সেই নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের অপেক্ষায় গোয়া। তবে, সারদেশাই এ নিয়ে এখনও প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি।  

২০১৬ সালে জন্ম নেয় গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি অর্থাৎ জিএফপি। কংগ্রেসের পাশাপাশি বিজেপিরও জোটসঙ্গী হয়েছে এই দলটি।  

২০১৭ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে ৪টি আসনে প্রার্থী দিয়ে তিনটিতে জয় পেয়েছিল। পরে জোট ভেঙে দেয়। গত বিধানসভায় বিজেপিকেই সমর্থন জানায় তারা। এই দলের সমর্থনেই গোয়াতে সরকার গঠন করেছিল বিজেপি। কিন্তু বিজেপির বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্রের অভিযোগ তুলে জোট থেকে বেরিয়ে আসে এই জিএফপি। এবার সেই সুযোগের সদ্বব্যবহারে তৎপর বাংলার লড়াকু নেত্রী মমতা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২১
ভিএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।