ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

ফ্যাশনে ও স্টাইলিংয়ে নতুন মাত্রা আনছে এআই

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২৪
ফ্যাশনে ও স্টাইলিংয়ে নতুন মাত্রা আনছে এআই

মানুষ কোন ধরনের পোশাক পরবে তা এআই ঠিক করে দিচ্ছে, ব্যাপারটা এমন নয়। তবে এআইয়ের সাহায্য নিয়ে পোশাকের নকশা করার প্রক্রিয়াটি এখনই শুরু হয়ে গেছে।

সারা বিশ্বের ফ্যাশনশিল্প এখন এআইনির্ভর হয়ে উঠছে। শুধু নকশাই নয়, পোশাকের বিপণন কৌশল বের করতেও এআইয়ের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। ফ্যাশন থেকে স্টাইলিং সর্বত্রই ব্যবহৃত হচ্ছে এআই।

পারসোনালাইজড কেনাকাটা

পারসোনালাইজড অর্থাৎ প্রত্যেক ক্রেতার চাহিদামাফিক কেনাকাটা করার সুযোগ দিচ্ছে এআই। ব্র্যান্ডগুলো ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ বুঝবে, এমন চাহিদা ক্রেতাদেরও তৈরি হয়েছে। ফ্যাশন ও স্টাইলিং কেমন হবে তা জানানোর জন্য এআইয়ের ব্যবহার বাড়াচ্ছে ব্র্যান্ডগুলো।

ফলে পোশাকের আকার, ক্রেতার দৈহিক বৈশিষ্ট্য, ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী কোন পোশাকটা জুতসই হবে তা দেখাতে পারছে পোশাকের ব্র্যান্ডগুলো। এই যেমন জার্মান কোম্পানি স্টাইলরাইজারের তৈরি এআই পালন করছে ডিজিটাল বিক্রয় কর্মীর ভূমিকা। ত্বকের রঙের সঙ্গে কোন রঙের পোশাক ভালো মিলবে তা জানিয়ে দিচ্ছে। এ ধরনের সুবিধা পাওয়ায় বেশির ভাগ ক্রেতাই স্টাইলরাইজার ব্র্যান্ডের পোশাক পুনরায় কিনেছে।

ডিজাইনে এসেছে নতুনত্ব

নিজের সৃজনশীলতা অর্থাৎ ডিজাইন করার ক্ষমতাকে আরও কয়েক ধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে এআই। টেক্সট-টু-ইমেজ মডেল যেমন—ডাল-ই বা মিডজার্নিকে দিয়ে পোশাক ও অলংকার তৈরি করা যাচ্ছে কয়েক মিনিটে। ডিজাইনাররা চাইলে এআই জেনারেটেড ছবিতে নিজস্ব স্টাইলের ছাপও রাখতে পারছেন। ফলে পোশাকের ডিজাইনে আসছে নতুনত্ব।

হংকংয়ের বাসিন্দা কেলভিন ওং ডিজাইনারদের জন্য তৈরি করেছেন এআই সিস্টেম ‘এইডা’। পোশাকের নকশা ও রং কী হবে, সেটা জানিয়ে দেয় এআই সিস্টেমটি। পরামর্শ দিয়েও ডিজাইনারদের সহায়তা করে থাকে। গত বছর অনুষ্ঠিত ফ্যাশন এক্স এআই ইভেন্টে প্রদর্শিত ৮০টিরও বেশি পোশাকের নকশায় অবদান রেখেছে এইডা।

পোশাকের ট্রেন্ড ঠিক করে দিচ্ছে

ফ্যাশন ট্রেন্ড কেমন হবে তা জেনে নিতে রাস্তাঘাটে তরুণরা কী পরছে, ফ্যাশন শোতে কী দেখানো হচ্ছে সেসবের ওপর নজর রাখতে হতো। এখন এসব তথ্যসংবলিত বিশাল ডাটাসেট বিশ্লেষণ করছে এআই। ফ্যাশন শোয়ের ছবি, সার্চ ইঞ্জিনের তথ্য, পোশাক বিক্রির তথ্য এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট থেকে ডাটা নিয়ে এসব ডাটাসেট তৈরি করা হচ্ছে। ফলে খুব দ্রুতগতিতে এবং নির্দিষ্টভাবে ফ্যাশন ট্রেন্ড সম্পর্কে জানা যাচ্ছে। যেমন—নিউ ইয়র্কভিত্তিক এআই কোম্পানি ট্রেন্ডালিটিকস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ছবি ও গুগল সার্চের তথ্য থেকে ট্রেন্ড শনাক্ত করে। এরপর ট্রেন্ডবিষয়ক তথ্য ফ্যাশন ব্র্যান্ডের হাতে তুলে দেয়। এতে বাড়ে ব্র্যান্ডগুলোর বিক্রি। কারণ পুরনো ফ্যাশন ট্রেন্ড সম্পর্কে আগেভাগেই তথ্য পাওয়া যায় এবং একই সঙ্গে এড়ানো যায় ব্যাবসায়িক ক্ষতি।

সহজ করেছে অনলাইন কেনাকাটা

অনলাইন থেকে কোনো কিছু কেনার সময় মনের মধ্যে সংশয় থাকে। ডিজিটালভাবে পণ্যটি যেমন দেখা গেছে সেটার সঙ্গে বাস্তবের মিল আছে কি না সেই প্রশ্ন শূন্যস্থানে ভরা। কিভাবে এই শূন্যস্থান পূরণ করা যায়, তা নিয়ে আর দুশ্চিন্তা করতে হচ্ছে না বিক্রেতাদের। পায়ের ছবি স্ক্যান করে পাঠালেই এআইসংবলিত অ্যাপ বলে দিচ্ছে কোন সাইজের জুতা নিখুঁতভাবে পায়ে এঁটে যাবে।

এ ছাড়া পোশাকটি পরলে কেমন দেখাবে সেই সংশয় দূর করতে ওয়ালমার্ট নিয়ে এসেছে এআই টুল। ক্রেতা ছবি আপলোড করলে পোশাক পরিহিত অবস্থায় নিজেকে দেখা যাবে। ফ্যাশনের সঙ্গে এআইকে সমন্বয় করার প্রবণতা বড় ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে বেড়েছে। ভবিষ্যতে যে ফ্যাশন ও এআইয়ের সম্পর্ক আরও গভীর হবে তার আভাস এখন সর্বত্র পাওয়া যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২৪
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।