ঢাকা: জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৯০ লাখ টন খেজুর উৎপাদিত হয়। যার ১৭ শতাংশ উৎপাদন হয় সৌদি আরবে।
যার মধ্যে একটি কারখানার ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে ভারী যান চালনাসহ সব কাজই করছেন মেয়েরা। সম্প্রতি ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে এমনই তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইবনে জায়েদ নামের এই খেজুর কারখানাটি সৌদি আরবের পূর্বদিকের অন্যতম সবুজ অঞ্চল আল-আহসাতে অবস্থিত। যেখানে প্রায় তিন লাখ একরজুড়ে একটি খেজুর বাগানে প্রায় ৩০ লাখ গাছ বিদ্যমান।
ওই কারখানায় এখন শতাধিক নারী কাজ করেন। যেখানে আগে বিদেশি শ্রমিকরা কাজ করতেন। তবে গত এক বছর ধরে এটি কেবল নারীরাই চালাচ্ছেন। কারখানাটির ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে হিসাবরক্ষক, মান নিয়ন্ত্রণ, প্যাকেজিংসহ সব ধরণের কাজ করে থাকেন নারীরাই। এমনকি ফর্কলিফটও চালনা করেন মেয়েরাই।
আকিলাহ আলি নামে তাদেরই একজন বলেন, প্রথমে কিছু জটিলতা ছিলো। ভারী ট্রাক চালানো শুধু পুরুষের কাজ মনে করা হতো। কিন্তু আমি খুশি, কারণ মেয়েরাও নতুন যেকোনো কাজ করতে পারে এবং সফল হতে পারে। সেটা আমি প্রমাণ করতে পেরেছি।
এ বিষয়ে কারখানার ম্যানেজার নাবতাহ আলসবাই বলেন, একদল নারীকে কারখানাটি পরিচালনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সেই দায়িত্ব পেয়ে আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি যে, আমরাও সফল হতে পারি এবং সৌদি আরবের মেয়েরা অন্যান্য খাতেও কাজ করতে পারে।
মূলত সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কর্মক্ষেত্রে নারীদের উপস্থিতি বাড়াতে বেশ কিছু সংস্কার নীতি চালু করেছে সৌদি আরব সরকার। এর মধ্যে রয়েছে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘোষণা করা ‘ভিশন ২০৩০’ নামে একটি সংস্কার পরিকল্পনা। এর লক্ষ্য সৌদি আরবের অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনা এবং নারীর শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা।
এর আওতায় ২০১৭ সাল থেকেই দেশটির নারীরা গাড়ি চালানো থেকে শুরু করে অনেক কাজের অনুমতি পেতে থাকেন। ২০১৯ সালে তো সৌদি আরবের শিল্প খাতে কাজ করা নারী কর্মীর সংখ্যা ছিলো প্রায় ১৭ হাজার।
তারই ধারাবাহিকতায় ইবনে জায়েদ নামক খেজুর কারখানাটির মালিক বিদেশি শ্রমিকদের বাদ দিয়ে ধীরে ধীরে মেয়েদের নিয়োগ দেওয়া শুরু করেন। যারা এখন বছরে প্রায় এক লাখ টন খেজুর উৎপাদন করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০২৩
এনএস