শস্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে পুতিনের সঙ্গে আরও একবার বৈঠকে বসছেন এরদোয়ান। বৈঠকে কৃষ্ণসাগর দিয়ে শস্য রফতানিতে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার চুক্তি নিয়ে কথা বলবেন তারা।
গত জুলাই মাসে এই চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়া রাশিয়ার সঙ্গে এই বৈঠকটিকে মহাগুরুত্বপূর্ণ হিসেবে অভিহিত করেছেন এরদোয়ানের প্রধান বৈদেশিক নীতি ও নিরাপত্তা পরামর্শক আকিফ কাগাতে কিলিক।
আজ (৪ সেপ্টেম্বর) রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের পর্যটনকেন্দ্র সোচিতে দুই নেতার এ বৈঠকটি হওয়ার কথা রয়েছে ।
আকিফ কাগাতে বলেছেন, ‘আমরা শস্যচুক্তিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখছি। সারাবিশ্ব থেকে শস্য করিডর নিয়ে আমরা প্রবল আগ্রহ দেখতে পাচ্ছি। আশা করি সাফল্য পাব। কারণ এ বিষয়টি পুরো বিশ্বের ওপর প্রভাব ফেলে।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া যখন ইউক্রেনে হামলা চালায় তখন দেশটির শস্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় গত বছরের জুলাইয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন এক চুক্তিতে সন্মত হয়। ওই চুক্তিতে কৃষ্ণসাগর দিয়ে শস্যবাহী জাহাজ চলাচল নিরাপদ করার বাদ্যবাধকতা ছিল। যার ফলে ইউক্রেনে আটকে যাওয়া শস্য আবারও বিশ্ব বাজারে প্রবেশ করতে শুরু করে। খবর আল জাজিরা।
কিন্তু বছর না ঘুরতেই নিজেদের শস্য ও কৃষিপণ্যও নির্বিঘ্নে বিশ্ববাজারে যেতে পারছে না বলে অভিযোগ তুলে রাশিয়ার এবং এ বছরের জুলাইয়ে রাশিয়া চুক্তিটি বাতিল করে। যদিও তারা আগের বছরের তুলনায় রেকর্ড পরিমাণ গম রফতানি করেছিল।
রাশিয়া বলছে, যদি তাদের শর্ত পূরণ হয় তবেই এই চুক্তিতে আবার ফিরবে তারা।
গত বৃহস্পতিবার সোচিতে রুশ এবং তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়া নিজেদের দাবি-দাওয়ার একটি তালিকা হস্তান্তর করেছে।
এরদোয়ান বলেছিলেন, শস্য চুক্তির নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলির কাছ থেকে পুতিনের কিছু প্রত্যাশা ছিল এবং ওই দেশগুলির জন্য এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইউক্রেনে ১৮ মাসের যুদ্ধের এই সময়ে এরদোগান পুতিনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। তুরস্ক রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় যোগ দেয়নি। এই মুহূর্তে রাশিয়ার জন্য বিদেশি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তুরুস্ক একটি প্রধান বাণিজ্য অংশীদার এবং লজিস্টিক হাব হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে।
ন্যাটো সদস্য তুরস্ক অবশ্য সামরিক ক্ষেত্রে ইউক্রেনকের সাথেও সম্পর্ক বজায় রাখছে এবং ইউক্রেনের ন্যাটো জোটে যোগদানের আগ্রহকেও সমর্থন করছে দেশটি।
এদিকে কৃষ্ণসাগর চুক্তি বাতিলের পর দানিউব বন্দর দিয়ে নিজেদের শস্য রপ্তানি করছিল ইউক্রেন। কিন্তু রোববার (৩ সেপ্টম্বর) ওই বন্দরে ড্রোন হামলা চালিয়ে সেটি ব্যবহারের অনুপযোগী করে দেয় রাশিয়া। এর আগে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছিলেন, মস্কো শস্য চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য প্রয়োজনীয় গ্যারান্টি পাবে এমন কোনও লক্ষণ দেখেনি। তার এই মন্তব্যের পর গত শুক্রবার বিশ্ববাজারে মার্কিন গমের দাম বেড়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২৩
এমএম