যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী ও শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক আইন লঙ্ঘনের কারণে জরিমানার মুখে পড়তে পারেন। ভাড়া দেওয়া ফ্ল্যাটের এনার্জি সার্টিফিকেট না থাকার কারণে তার ১০ হাজার ইউরো জরিমানা হতে পারে।
চলতি বছরের শুরুতে ওই ফ্ল্যাটের ভাড়া থেকে আয়ের নিবন্ধন না করার জন্য টিউলিপ সিদ্দিক তদন্তের মুখে পড়েছিলেন। এখন প্রশ্ন উঠছে তিনি একজন বাড়িওয়ালা হিসেবে তার আইনি দায়িত্ব পালন করেছেন কি না।
ভাড়াটে সম্পত্তির জন্য এনার্জি পারফরম্যান্স সার্টিফিকেট (ইপিসি) থাকা বাধ্যতামূলক। তবে সংবাদপত্রটি উত্তর লন্ডনের ওই ঠিকানার জন্য কোনো ইপিসি খুঁজে পায়নি। তিনি ও তার স্বামী ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে ওই বাড়ি ভাড়া দিচ্ছেন।
বাড়িওয়ালারা ইপিসি নিয়ম তিন মাসের বেশি না মানলে সর্বনিম্ন ১০ হাজার ইউরো জরিমানায় পড়তে পারেন। সম্পত্তির মূল্য অনুযায়ী ২০ শতাংশ পর্যন্ত সর্বোচ্চ মোট দেড় লাখ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
মেইল অন সানডে জানতে পেরেছে, ওই সম্পত্তি টিউলিপ সিদ্দিক ও তার স্বামী সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ক্রিস্টিয়ান পার্সি ২০১৮ সালে আট লাখ ৬৫ হাজার ইউরোতে কিনেছিলেন। একটি লেটিং এজেন্সি ওই সম্পত্তির দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে।
লেটিং এজেন্সি হলো একটি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা যা ভাড়া দেওয়ার জন্য সম্পত্তি দেখভাল এবং মালিকদের পক্ষ থেকে ভাড়াটে খোঁজা, চুক্তি তৈরি করা এবং অন্যান্য কাজগুলো সম্পন্ন করে।
মন্ত্রী টিউলিপ এর আগে ভাড়া থেকে আসা আয় সঠিকভাবে দেখাতে ব্যর্থ হন। প্রায় ১৪ মাসে ১০ হাজার পাউন্ডেরও বেশি অর্থ ভাড়া থেকে আয়ের কথা প্রতিবেদনে বলা হয়। এই ব্যর্থতায় তিনি পার্লামেন্টারি কমিটির তদন্তের মুখে পড়েন।
স্ট্যান্ডার্ডস কমিশনার টিউলিপের পার্লামেন্টারি নিয়ম লঙ্ঘনের তথ্য খুঁজে পায়। তবে তার প্রশাসনিক ত্রুটির ব্যাখ্যাও মেনে নেয়। তিনি ইতোমধ্যে লন্ডনের আরেকটি সম্পত্তি থেকে আয়ের তথ্য জানিয়েছেন। ওই সম্পত্তির ইপিসি রয়েছে।
টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের কয়েক সদস্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে চার বিলিয়ন ইউরো পরিমাণ অর্থ লোপাটের অভিযোগ উঠেছে।
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন দুই সপ্তাহ আগে টিউলিপ সিদ্দিক, তার মা শেখ রেহানা, তার খালা ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।
বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৪০০ কোটি পাউন্ড আত্মসাৎ করেছেন এমন অভিযোগে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ টিউলিপ সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা।
তবে তিনি অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন এখন পর্যন্ত তার সাথে কোনো কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করেনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪
আরএইচ