যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সান ফ্রান্সিসকো উপসাগরে অবস্থিত কুখ্যাত দ্বীপ-কারাগার আলকাত্রাজ পুনরায় চালু ও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নিয়েছেন।
‘দ্য রক’ নামে পরিচিত আলকাত্রাজ বহু দশক ধরে আর কারাগার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে না।
ট্রাম্প মনে করেন, এই দ্বীপকে আবারও বিপজ্জনক বন্দিদের আটক রাখার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রে ‘আইন ও শৃঙ্খলার প্রতীক’ হিসেবে কাজ করবে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধ্বংসপ্রায় এই কারাগারকে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করে তোলা ‘একেবারেই বাস্তবসম্মত নয়’।
সান ফ্রান্সিসকো উপকূল থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আলকাত্রাজ শুরুতে একটি নৌ প্রতিরক্ষা দুর্গ হিসেবে নির্মিত হয়েছিল। পরে ২০ শতকের শুরুতে এটি একটি সামরিক কারাগারে রূপান্তরিত হয়।
১৯৩৪ সালে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ফেডারেল কারাগারে রূপান্তরিত হয়। সে সময় এটি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম কুখ্যাত কারাগার হিসেবে পরিচিতি পায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব প্রিজন্স অনুযায়ী, অন্যান্য ফেডারেল কারাগারের তুলনায় এটি পরিচালনায় প্রায় তিনগুণ বেশি খরচ হতো। অবশেষে ১৯৬৩ সালে এটর্নি জেনারেল রবার্ট কেনেডি এই কারাগারটি বন্ধ করার নির্দেশ দেন।
বর্তমানে দ্বীপটি একটি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং এটি ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিসের অধীনে পরিচালিত হয়। প্রতিবছর প্রায় ১৪ লাখের বেশি মানুষ এখানে ভ্রমণ করে।
৪ মে ট্রুথ সোশাল-এ এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, তিনি সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন আলকাত্রাজ কারাগার পুনরায় চালু ও সম্প্রসারণের জন্য। তিনি লেখেন, অনেকদিন ধরেই আমেরিকা হিংস্র, সহিংস ও পুনঃঅপরাধী অপরাধীদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পরদিন হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, তার দৃষ্টিতে আলকাত্রাজ একটি শক্তিশালী ও গভীর প্রতীকের নাম— আইন ও শৃঙ্খলার প্রতীক।
তিনি বলেন, এই দেশে আমাদের আইন ও শৃঙ্খলা দরকার। তাই আমরা বিষয়টি (আলকাত্রাজ খোলা) গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবো। এখানকার কিছু লোক এ নিয়ে খুব কঠোরভাবে কাজ করবে।
যদিও ট্রাম্প এটিকে ‘আকর্ষণীয় একটি ভাবনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, তবুও স্বীকার করেছেন যে বর্তমান অবস্থায় আলকাত্রাজ এক ধরনের ‘জংধরা ও পচে যাওয়া বিশাল ধ্বংসাবশেষ’।
তিনি আরও বলেন, এটা একইসঙ্গে ভয়ঙ্কর, সুন্দর, শক্তিশালী এবং শোচনীয়— সবকিছুর প্রতীক।
এমএম