ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে অমানবিক আচরণের শিকার হল হৃদরোগে আক্রান্ত পাকিস্তানি দুই শিশু। এ খবর শুনে তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনীর।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এআরওয়াই এক প্রতিবেদনে জানায়, এই শিশুরা বর্তমানে রাওয়ালপিন্ডির আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব কার্ডিওলজিতে (এএফাইসি) ভর্তি রয়েছে এবং সেখানে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সিন্ধুর হায়দরাবাদ শহরের বাসিন্দা, এই দুই শিশুর পিতা শাহিদ আহমেদ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘অমানবিক’ আচরণকে তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়ে বলেন, তার দুই সন্তানের জন্ম থেকেই হৃদযন্ত্রে জটিল সমস্যা রয়েছে। দীর্ঘ সাত বছর অপেক্ষা ও চেষ্টা করার পর অবশেষে তারা ভারতের ভিসা পান। শুধুমাত্র সন্তানদের চিকিৎসার আশায় তারা ভারতে গিয়েছিলেন।
গত ২১ এপ্রিল তিনি পরিবারের সঙ্গে ভারতের ফরিদাবাদ শহরে পৌঁছান। পরদিনই শিশুদের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় এবং অস্ত্রোপচারের দিনও নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু ২৪ এপ্রিল, ভারতের ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস থেকে এক নির্দেশ আসে—পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে হবে।
শাহিদ আহমেদ বলেন, আমার সন্তানদের চিকিৎসা না দিয়ে যেভাবে আমাদের বের করে দেওয়া হয়েছে, তা ছিল নির্মম। আমি সেনাপ্রধান আসিম মুনীর সাহেবের কাছে কৃতজ্ঞ, যিনি নিজের উদ্যোগে আমাদের শিশুদের চিকিৎসা নিশ্চিত করেছেন। এখন এএফাইসি-এ যে আন্তরিকতা ও যত্ন পাচ্ছি, তা আমাদের প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বেশি।
এএফাইসি-এর দায়িত্বরত ডাক্তাররা জানান, বর্তমানে যে দুই শিশুর চিকিৎসা চলছে, তারা হলো— ৯ বছর বয়সী আবদুল্লাহ ও ৭ বছর বয়সী মানসা। দুজনই জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত। তাদের ‘টেরালজি অব ফেলট’ নামে পরিচিত জটিল জন্মগত হৃদরোগ রয়েছে। এতে ফুসফুসের ধমনিগুলো সংকুচিত থাকে, ফলে রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। তারা জানান, শিশুদের অস্ত্রোপচার পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন হবে এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখেই তা করা হবে।
ডাক্তাররা জানান আরও বলেন, এমন রোগীদের চিকিৎসার জন্য ভারতে পাঠানোর প্রয়োজন নেই। পাকিস্তানেই বিশ্বমানের কার্ডিয়াক সেবা দেওয়া সম্ভব।
এমএম