ঢাকা, রবিবার, ৯ আষাঢ় ১৪৩২, ২২ জুন ২০২৫, ২৫ জিলহজ ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

স্কুলছাত্রীর বোতলবন্দি চিঠির জবাব মিলল ৩১ বছর পর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০:৫৫, জুন ২২, ২০২৫
স্কুলছাত্রীর বোতলবন্দি চিঠির জবাব মিলল ৩১ বছর পর

স্কটল্যান্ডের এক স্কুলছাত্রীর লেখা একটি চিঠি বোতলবন্দি করে ১৯৯৪ সালে সমুদ্রে ফেলা হয়েছিল। ৩১ বছর পর ২০২৫ সালে নরওয়েতে সমুদ্র সৈকত পরিষ্কারের সময় বোতলবন্দি সেই চিঠিটি পান এক জার্মান স্বেচ্ছাসেবী।

সেই চিঠির জবাবও দেন এই স্বেচ্ছাসেবী।

স্কটল্যান্ডের মোরের পোর্টনকি গ্রামের বাসিন্দা অ্যালাইন স্টিফেন বেরেসফোর্ড। ১৯৯৪ সালে যখন তার বোতল বন্দী বার্তাটি সমুদ্রে ফেলা হয় তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১২ বছর। স্কুল প্রজেক্টের অংশ হিসেবে এই বার্তা বোতল বন্দী করে সমুদ্রে ফেলা হয়েছিল।

অ্যালাইনা বেরেসফোর্ডের হাতে লেখা চিঠিটি উত্তরপূর্ব স্কটল্যান্ডে উৎপাদিত ফিজি ড্রিঙ্কের একটি খালি বোতলে বন্দি করে সমুদ্রে ফেলা হয়েছিল।

চিঠিতে অ্যালাইনা লেখেন: ‘প্রিয় সন্ধানকারী, আমার নাম আলাইনা স্টিফেন এবং আমার বয়স ১২। আমি পোর্টনকি থেকে এসেছি এবং আমি পানির ওপর একটি প্রকল্পে (স্কুল প্রকল্প) কাজ করছি, তাই আমি একটি বোতলে এ বার্তা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার শিক্ষিকার স্বামী এটি সমুদ্রে ফেলেছেন। আপনি যদি এটি পান, দয়া করে আপনার নাম, শখ, কোথায় ও কখন এটি পেয়েছেন এবং আপনার এলাকার কিছু তথ্য লিখে জানাবেন। ’

এখন ৩১ বছর ২০২৫ সালে জার্মানির পিয়া ব্রড্টম্যান নামের এক তরুণী অ্যালাইনাকে একটি পোস্টকার্ড পাঠান। যেখানে তিনি চিঠিসহ বোতলটি পাওয়ার কথা লিখেছেন এবং চিঠিসহ কিছু ছবি যুক্ত করেন।

অ্যালাইনা স্টিফেন-কে লেখা চিঠিতে পিয়া ব্রড্‌টম্যান লিখেন: ‘আমার নাম পিয়া এবং আমি জার্মানি থেকে এসেছি। আজ আমি নরওয়ের ভেগার কাছের ছোট দ্বীপ লিসশেলয়য়া-তে আপনার বোতলের ভেতরে লেখা বার্তা পেয়েছি। আমি একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে চার মাসের জন্য সৈকত পরিষ্কারের কাজে এসেছি। আজ আমরা লিসশেলয়য়া পরিষ্কার করছিলাম। পোস্টকার্ডের সামনে আপনি আমাদের কর্মতরী 'নেমো' এবং আমাদের পালতোলা নৌকা 'ফন'-এর ছবি দেখতে পাবেন, যেখানে আমরা থাকি। আপনি ভেগা এলাকাটিও দেখতে পাবেন। আমি ভাবছি, আপনার শিক্ষিকার স্বামী কখন এবং কোথা থেকে বোতলটি সমুদ্রে ফেলেছিলেন?

পিয়া আরও লেখেন তার বয়স ২৭ এবং তিনি রক ক্লাইম্বিং ও নৌকা চালাতে খুব ভালোবাসেন।

এত বছর পর চিঠির জবাব পাওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করে অ্যালাইনা স্টিফেন বিবিসি স্কটল্যান্ডকে বলেন, তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না তিন দশক পরেও তার হাতে লেখা আসল চিঠির অবস্থা এতটা ভালো অবস্থায় আছে।

অ্যালাইনার বয়স এখন ৪২ বছর। আলাইনা বলেন, তিনি অবাক হয়েছিলেন যখন দেখলেন পোস্টটি তার নামেই এসেছে।

তিনি বলেন, আমি এখনো আগের ঠিকানাতেই থাকি। আমি এক সময় পোর্টনকির অন্য বাড়িতে থাকতাম, কিন্তু পরে আবার আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে এই বাড়িতেই ফিরে এসেছি।
আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না, এটা তো ৩১ বছর আগে পাঠানো হয়েছিল।

অ্যালাইনা জানান, তিনি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পিয়াকে খুঁজে পান এবং তাকে ১৯৯৪ সালে তার লেখা চিঠি ও তার ছবি পাঠাতে বলেন।

অ্যালাইনা বলেন, তিনি বিস্মিত হয়ে যান বার্তাটি এত পরিষ্কারভাবে পড়া যায়!

তিনি বলেন, বার্তাটি লেখার সময় তিনি ঠিকভাবে মনে করতে পারছেন না। তবে মনে আছে এটা মোরে কাপের বোতলে পাঠানো হয়েছিল। তার শিক্ষিকার স্বামী একজন জেলে ছিলেন, তিনি এটিকে সমুদ্রে ফেলেছিলেন।

অ্যালাইনা আরও বলেন, চিঠি অনুযায়ী, এটি তিনি একটি পানির প্রকল্প হিসেবে করেছিলাম, যখন তিনি প্রাইমারি ক্লাস সেভেনে ছিলেন।

পিয়ার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন এবং ভবিষ্যতেও তা বজায় থাকবে বলে আশা করছেন অ্যালাইনা স্টিফেন।

এমইউএম/জেএইচ


 


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।