যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইরান এখনো সতর্ক অবস্থানে রয়েছে, কারণ গাজা ও লেবাননে যুদ্ধবিরতির ইতিহাস বিবেচনায় ইসরায়েলকে বিশ্বাস করা যায় না। তেহরানের সেন্টার ফর মিডল ইস্ট স্ট্র্যাটিজিক স্টাডিসের রিচার্চ ফেলো আব্বাস আসলানি এমনটিই মনে করেন।
আল জাজিরাকে তিনি বলেন, ‘তাই তেহরান এখনো সতর্ক, এবং দেশটির কোনো শীর্ষ কর্মকর্তা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেননি। যদি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কোনো লঙ্ঘন না হয়, তাহলে আমি মনে করি ইরান যুদ্ধবিরতি মেনে চলবে। ’
আসলানি বলেন, এটি ছিল ইরান এবং ইসরায়েল ও তাদের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধ। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করা এবং ইরানে শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন ঘটানো, তবে তারা কোনও লক্ষ্যই অর্জন করতে পারেনি।
তিনি বলেন, আমরা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কিছু ক্ষয়ক্ষতি দেখেছি, তবে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কেবল স্থাপনা বা যন্ত্রপাতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ইরান তাদের পারমাণবিক উপকরণ নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ফেলেছে এবং তাদের জ্ঞান ও প্রযুক্তি অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
আসলানি আরও বলেন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতাও ধ্বংস হয়নি, কারণ এরইমধ্যে ইরান ইসরায়েলে পাল্টা আঘাত হেনেছে।
তার ভাষায়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বার্থক ও অর্থবহ আলোচনা এখনই সম্ভব নয়, কারণ পারমাণবিক আলোচনা চলার মাঝেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল ইরানে হামলা চালিয়েছে।
গত ১৩ জুন প্রথমে ইরানে পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইসরায়েল। পরে ইরান ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে জবাব দেয়। সেই থেকে দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল।
এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। সবশেষ সোমবার কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরান ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে রাজি বলে ঘোষণা দেন।
পরে জানা যায়, কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল থানির মধ্যস্থতায় ইরান যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাতারের আমিরকে ফোন করে জানান, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং ইরানকে রাজি করাতে দোহাকে ভূমিকা রাখতে অনুরোধ করেন।
এরপর কাতারের প্রধানমন্ত্রী ইরানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে ইরানের সম্মতি আদায় করেন। এই সমঝোতা হয় সোমবার রাতে কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর।
আরএইচ