ঢাকা: আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান নেতা ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা দিনে দিনই বাড়ছে। টানা তিন জয়ে তার সম্ভাবনা এখন যথেষ্ট উজ্জ্বল বলে মনে করছেন অনেকে।
সুপার টুইসডে’র আগে রিপাবলিকান নেতাদের সর্বশেষ বিতর্কে মুখোমুখি হয়েছিলেন টেড ক্রুজ, মার্কো রুবিও ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ বিতর্কেই ট্রাম্পকে ধুয়ে দিয়েছেন প্রার্থীতার দৌড়ে থাকা বাকি দুই সম্ভাবনাময় নেতা। কম যাননি ট্রাম্পও। প্রার্থীদের অভিবাসন ও স্বাস্থ্য পরিকল্পনাই এবারের বিতর্কের মূখ্য বিষয় ছিল।
বিতর্কে প্রথম কামানটা দাগেন মার্কো রুবিও। তিনি বলেন, উত্তরাধীকার সূত্রে ট্রাম্প যদি ২০০ মিলিয়ন ডলার না পেতেন, তাহলে তিনি কোথায় থাকতেন, তা কেউ অনুমান করতে পারবে না। তিনি একজন ‘নিকৃষ্ট’ ব্যবসায়ী।
এ সময় ট্রাম্পের বিফল অনলাইন শিক্ষা উদ্যোগ, ট্রাম্প বিশ্ববিদ্যালয় ইস্যুতে কড়া সমালোচনা করেন রুবিও। এছাড়া ট্রাম্পের নির্মাণ প্রকল্পে আমেরিকানদের রেখে বিদেশি কর্মী নিয়োগেরও সমালোচনা করেন তিনি। রুবিও বলেন, এই স্টেজে একমাত্র আপনিই আছেন, যিনি অবৈধভাবে কর্মী নিয়োগ করে জরিমানার মুখে পড়েছেন।
জবাবে উত্তপ্ত ট্রাম্প বলেন, আমি লাখ কর্মী নিয়োগ দিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। আপনি তো কারোরই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেননি। আপনি একজন চতুর অভিনেতা মাত্র। নিজের ক্রেডিট কার্ড নিয়েই আপনাকে সমস্যা পোহাতে হয়।
ট্রাম্প এ সময় টেড ক্রুজকে সরাসরি ‘মিথ্যাবাদী’ বলে আক্রমণ করেন। জবাবে ক্রুজ বলেন, কাউকে ‘মিথ্যাবাদী’ অপবাদ দেওয়াও একটা মিথ্যা। আপনি এ ধরনের মিথ্যার আশ্রয় প্রতিদিনই নিয়ে থাকেন।
ট্রাম্প ক্রুজকে বলেন, আপনার পাশে কেউই নেই। একজন রিপাবলিকান নেতাও আপনাকে সমর্থন করে না। একজনও না...নিজেকে নিয়ে লজ্জা হওয়া উচিত আপনার। আমি জানি, আপনি বিব্রত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের নির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী, আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি ডেমোক্রেটদের সাউথ ক্যারোলিনা প্রাইমারি। আগামী ১ মার্চ দুই দলের ‘সুপার টুইসডে’। এ দিন ১১টি অঙ্গরাজ্য একসঙ্গে প্রার্থী নির্বাচন করবে। আগামী ১৮ থেকে ২১ জুলাই রিপাবলিকান কনভেনশন। এ কনভেনশনে চূড়ান্ত প্রার্থীর মনোনয়ন দেওয়া হবে। আর ২৫ থেকে ২৮ জুলাই ডেমোক্রেট কনভেনশন। সব প্রক্রিয়া শেষে আগামী ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। জাতীয় এ নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র তার ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবে। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতাগ্রহণ করবেন।
পূর্ববর্তী জরীপগুলো বলছে, সুপার টুইসডে’র লড়াইয়েও এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। ১১টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ১০টিতেই তার জয় দেখতে পাচ্ছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে, এ পর্যন্ত ট্রাম্পের পক্ষে রায় দিয়েছেন ৮২ জন ডেলিগেট। ক্রুজের পক্ষে মত দিয়েছেন ১৭ জন। আর রুবিওকে পছন্দ করেছেন ১৬ জন। রিপাবলিকান দলের পক্ষে মনোনয়ন পেতে হলে একজন প্রার্থীকে অন্তত ১ হাজার ২৩৭ জন ডেলিগেটের সমর্থন প্রয়োজন।
অন্যদিকে, ডেমোক্রেট দলে যথেষ্ট শক্ত অবস্থানে আছেন হিলারি ক্লিনটন। তার পক্ষে ৫০৫ জন ডেলিগেট রায় দিয়েছেন। আর বার্নি স্যান্ডার্সকে পছন্দ করেছেন ৭১ জন। সুপার টুইসডে’তে ১ হাজার ৪ জন ডেলিগেটকে নিজের পক্ষে টানতে তারা লড়াইয়ে নামবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৬
আরএইচ