ঢাকা, রবিবার, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৮ জুলাই ২০২৪, ২১ মহররম ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ব্রাসেলস হামলা

বেলজিয়ামের সঙ্গে একাত্মতায় বিশ্ব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫২ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৬
বেলজিয়ামের সঙ্গে একাত্মতায় বিশ্ব ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: প্যারিস হামলার ক্ষত এখনো শুকিয়ে যায়নি ইউরোপের বুক থেকে। নভেম্বরের ওই হামলার পর থেকেই ফ্রান্স, বেলজিয়ামসহ এই মহাদেশের অন্যান্য দেশগুলো সন্ত্রাস মোকাবেলায় মোক্ষম একটা পথের সন্ধানে রয়েছে।

নিয়মিত চলছিল নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান। এক্ষেত্রে বেলজিয়াম অগ্রগণ্য।

কিন্তু ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে হামলার ঘটনার ছয় মাস পার না হতেই মৃত্যুর বিভিষিকা হানা দিল সন্ত্রাসীদের পাকড়াওয়ে সবচেয়ে সক্রিয় বেলজিয়ামে। মঙ্গলবার (২২ মার্চ) স্থানীয় সময় সকাল ৮টার (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা) দিকে দেশটির রাজধানী ব্রাসেলসে অবস্থিত যাভেনতেম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যেন হঠাৎই প্রচণ্ড বিস্ফোরণে কেঁপে উঠলো। একটা নয়, এক সঙ্গে দু’টো বিস্ফোরণ। চোখের পলকে ঝরে গেল ৩৪টি তাজা প্রাণ। আহত হলেন শতাধিক।

যাভেনতেম বিমানবন্দরে হামলার এক ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া গেল ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদরদপ্তরে খুব কাছের মায়েলবিক মেট্রোস্টেশনে। এখানের বিস্ফোরণেও আহত হলেন প্রায় ২০ জন।

ব্রাসেলসে হামলার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। শুধু তাই নয়, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পুরো বিশ্বই যেন এক মুহূর্তে বেলজিয়াম হয়ে ওঠে। রাতে কালো, হলুদ আর লাল আলোয় প্যারিসের আইফেল টাওয়ার নিজেই যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো এক টুকরো বেলজিয়াম হয়ে উঠলো। এ যেন সন্ত্রাসকে রুখতে মানবতার মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো।

শুধু আইফেল টাওয়ারই নয়, রাতের আঁধারে বার্লিনের ব্রান্ডেনবার্গ গেট আর নিউইয়র্কের ওয়াল্ড ট্রেড সেন্টারও একই আলোয় নিজেকে রাঙালো। সেই সঙ্গে বিশ্বজুড়ে বেলজিয়াম হয়ে উঠলো আরো শত শত স্থাপনা, মন্যুমেন্ট।

এদিকে, হামলার পরপরই ‘যেকোনো প্রকারে’ গণতন্ত্র অক্ষুন্ন রাখার ও সন্ত্রাস মোকাবেলার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে ইইউ। বিরল এক যৌথ বিবৃতিতে ইইউ ইনস্টিটিউশন ও ইইউ নেতারা বলেছেন, ‘ব্রাসেলস হামলা আমাদের মুক্ত গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আক্রমণ’।

গ্রিসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পৃথিবীর প্রতিটা দেশ এখন বেলজিয়াম। আমাদের রাজধানী আক্রান্ত হয়েছে। এ হত্যাযজ্ঞে তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি হতাহতদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। সেই সঙ্গে গণতান্ত্রিক পথে সন্ত্রাস মোকাবেলার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ বলেছেন, ইউরোপ আক্রান্ত হয়েছে। সন্ত্রাস মোকাবেলায় আমাদের একাট্টা হতে হবে।

জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল বলেছেন, এ হত্যাযজ্ঞ হৃদয়বিদারক। সন্ত্রাস মোকাবেলায় আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, আমরা কখনোই সন্ত্রাসকে বিজয়ী হতে দেব না।

কিউবা সফররত মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এ হামলাকে ‘ভয়ানক’ বলে মন্তব্য করে বলেছেন, সন্ত্রাসের কালো থাবা মোকাবেলায় আমাদের এক হতে হবে। যারা এ বিশ্বের মানুষের নিরাপত্তার হুমকি, তাদের আমরা রুখে দিতে পারবোই।

জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন এ হামলাকে ‘অত্যন্ত জঘণ্য’ বলে মন্তব্য করে বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও শান্তি অক্ষুন্ন রাখতে বেলজিয়াম ও ইউরোপ তাদের অঙ্গীকার রক্ষায় সঠিক পথেই কাজ করবে।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপে এরদোগান বলেছেন, ব্রাসেলসে যে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে, তাদের মানবিক ও নৈতিক কোনো মূল্যবোধ নেই।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, সন্ত্রাসের কোনো সীমানা নেই। সন্ত্রাসীরা বিশ্বময় মানুষের জন্য হুমকি। আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ভিত্তিতে এদের মোকাবেলা করতে হবে।

পোপ ফ্রান্সিসস বলেছেন, ব্রাসেলস হামলা পুরোপুরি ‘অন্ধ’ সহিংসতা।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৬
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।