ঢাকা: ক্রমবর্ধমান প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর লক্ষ্যে নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডুতে আঞ্চলিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার, সেন্টার অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ এবং ডিএআই ইউরোপের সহায়তায় দুই দিনব্যাপী (২৬ মে এবং ২৭ মে) সম্মেলনটির আয়োজন করে নেপালে ইউরোপিয় ইউনিয়ন ডেলিগেশন।
এতে মূল আলোচ্য বিষয় ছিলো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো।
সম্মেলনে জানানো হয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবের বিচারে দক্ষিণ এশিয়ার অবস্থান সর্বাধিক দুর্বল। একইসঙ্গে এ অঞ্চলে বিভিন্ন সৃজনশীল উদ্যোগও পরিলক্ষিত হয়েছে, যা বিশ্বের অন্য দেশগুলোর জন্য অনুপ্রেরণা যোগাতে সক্ষম। এছাড়া গত ২২ এপ্রিল স্বাক্ষরিত প্যারিস চুক্তির মতো নতুন আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের ফলে নতুন উদ্যোগ গ্রহণে গতিশীলতা এসেছে।
সম্মেলনে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপে সুনামি, ভারতের উত্তরাখান্দ ও বাংলাদেশে ব্যাপক বন্যা, পাকিস্তান ও নেপালে ভূমিকম্প এবং মানবিক বিপর্যয় ও ব্যাপক প্রাণহানির মতো চ্যালেঞ্জগুলো আলোচিত হয়।
সম্মেলেনে অংশগ্রহণকারীরা একটি দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা থেকে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলটির উঠে আসাকে উৎকৃষ্ট উদাহরণ ও অনুকরণীয় অঞ্চল হিসেবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরেন।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং মোকাবেলায় সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকার বিষয়ও সম্মেলনে গুরুত্ব লাভ করে। এতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো ঘটনার সংবাদ পরিবেশনায় মানবীয় দৃষ্টিভঙ্গি, ভ্রান্তিহীনতা এবং সঠিক সময় প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপও করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন কৌশল এবং কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা ও এর প্রচারসহ জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকাও আলোচনা করা হয়।
এ অঞ্চলের জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব শুধুমাত্র প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় জানিয়ে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে জল এবং খাদ্য নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করেছে। এর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নারী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী।
সম্মেলনে জানানো হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন গ্লোবাল ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যালায়েন্স প্লাসকে (জিসিসিএ+) তহবিল প্রদান করে থাকে। মোট তহবিলের পরিমাণ ৩০০ মিলিয়ন ইউরো। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সর্বাধিক দুর্বল দেশগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এ তহবিল প্রদান করা হয়।
দু’দিনব্যাপী এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন নেপালের উপ-প্রধানমন্ত্রী ভীম রাওয়াল। সার্কে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তিরিংকওসহ সরকারি কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞ, দক্ষিণ এশিয়ার সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৮ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০১৬
এমসি/এএসআর