আইএস সংশ্লিষ্ট সংবাদ সংস্থা আমাক বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) জঙ্গি গোষ্ঠীটির এ দাবির খবরটি দিয়েছে। আমাকের খবর অনুযায়ী, আইএস এক ক্ষুদে বার্তায় বলেছে, বুধবার লন্ডনে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সামনে ইসলামিক স্টেটের এক যোদ্ধা হামলা চালিয়েছেন।
তবে হামলাকারীর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততার বিশেষ কোনো তথ্য উপস্থাপন করেনি আইএস। তারা যে ভাষায় বলেছে, এ ভাষায় সাধারণত তাদের চেতনায় উদ্বুদ্ধ কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে বলা হয়ে থাকে, অতীতেও এমন নজির আছে। অর্থাৎ হামলাকারী সরাসরি আইএস সংশ্লিষ্ট নয়, যদি না হয়ে থাকে, তবে তাদের চেতনায় উদ্বুদ্ধ।
ওই ‘সন্ত্রাসী ঘটনায়’ জড়িত সন্দেহে এরইমধ্যে আট জনকে আটক করা হয়েছে। ওই ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যসহ দুই জন নিহত হন। পুলিশের গুলিতে মারা যায় হামলাকারীও।
বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে বলেন, হামলাকারী ব্রিটেনে জন্ম নেওয়া নাগরিক। ক’বছর আগেই তার বিরুদ্ধে সহিংস কট্টরপন্থায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তদন্ত করেছিল এমআই৫। ব্রিটেনে জন্ম নেওয়া হলেও ওই ব্যক্তি ছিলেন ‘সীমান্তের লোক’।
তবে তার বিস্তারিত পরিচয় জানাননি প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া, তার সঙ্গে আর কেউ জড়িত ছিল কিনা সে বিষয়েও কিছু খোলাসা করে বলেননি টেরিজা মে।
সকালে এ নিয়ে ব্রিফিংয়ে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের হেড মার্ক রাওলি বলেন, বার্মিংহাম, লন্ডনসহ দেশের সব স্থানে এ ঘটনার তদন্ত চলছে। আমাদের এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে হামলাকারী একলা ছিল, তবে সে আন্তর্জাতিক কোনো সন্ত্রাসবাদে উদ্বুদ্ধ ছিল। পরবর্তী কোনো ঝুঁকির তথ্য আমাদের কাছে নেই।
পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, ওই ঘটনায় হতাহতদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন জাতীয়তার মানুষ রয়েছেন বলে তাদের পরিচয় প্রকাশ করছেন না তারা। তাছাড়া তদন্ত চলছে বলে হামলাকারীর পরিচয়ও প্রকাশ না করতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন মার্ক রাওলি।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, হামলাকারী প্রথমে ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজে পথচারীদের ওপর তার চার চাকার প্রাইভেট গাড়ি চালিয়ে দেয়। এরপর গাড়ি থেকে ছুটে গিয়ে ওয়েস্টমিনস্টার প্যালেসের সামনে দায়িত্ব পালনকারী ওই পুলিশ সদস্যকে ছুরিকাঘাত করে। তারপর সে পার্লামেন্টে এমপিদের প্রবেশের পথ দিয়ে ছুরি নিয়ে ভেতরে ছুটে যেতে চাইলে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাকে দু’টি গুলি করেন। ওদিকে তার ছুরিকাঘাত ও গাড়ির চাপায় কাতরাতে থাকেন পুলিশ ও পিষ্ট হওয়া পথচারীরা। তবে কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলে মারা যান পুলিশ সদস্য। তৎক্ষণাৎ হামলাকারী এবং অন্যদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হলেও সেখানে হামলাকারীসহ তিন জনের মৃত্যুর খবর দেন চিকিৎসকরা।
যদিও পরে হাসপাতালে চার জনের মৃত্যুর খবর বলা হয়েছিল, কিন্তু এখন আবার এ সংখ্যা কমিয়ে তিন বলছেন রাওলি।
হামলায় ৪০ জন আহত হওয়ার কথা বলা হয়েছে সকালে। এদের মধ্যে বেশ ক’জনের জাতীয়তা জানা গেছে। রয়েছেন ১২ জন ব্রিটিশ, ৪ জন দক্ষিণ কোরিয়ান, ৩ জন ফরাসি, ২ জন রোমানিয়ান, ২ জন গ্রিক, ১ জন করে আমেরিকান, পোলিশ, আইরিশ, চাইনিজ, ইতালিয়ান ও জার্মান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৭/আপডেট ১৯২৬ ঘণ্টা
এইচএ/
আরও পড়ুন
** ওয়েস্টমিনস্টারে হামলাকারী ‘ব্রিটিশ’, চিহ্নিত এমআই৫’র
** লন্ডন হামলায় ৭ সন্দেহভাজন আটক
** লন্ডন হামলায় নিহতের সংখ্যা কমিয়ে ৩ বলছে পুলিশ
** লন্ডন হামলায় সংসদ সদস্যের বীরত্ব
** টেরিজা মে’কে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস ট্রাম্পের
** ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বাইরে হামলায় নিহত বেড়ে ৫, আহত ৪০
** ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বাইরে হামলায় নিহত ৪, আহত ২০