বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কথা বলছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কোরীয় উপদ্বীপ ঘেঁষে প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের রণতরী কার্ল ভিনসনের নেতৃত্বে সামরিক বাহিনীর অবস্থানের প্রেক্ষিতে ওয়াশিংটন-পিয়ংইয়ং উত্তেজনার মধ্যে এ সাক্ষাৎকার দিলেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে তাদের সঙ্গে আমরা বড় থেকে বড় ধরনের সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারি, এমন আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু আমি অবশ্যই এই বিবাদের কূটনৈতিক সমাধানকেই অগ্রাধিকার দেবো।
এর পক্ষে ট্রাম্প দাবি করেন, এখনও তারা সমাধানের টেবিলে সামরিক পদক্ষেপকে না এনে নানা রকমের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আসছেন। এই নিষেধাজ্ঞায় পড়ে যদি উত্তর কোরিয়া ফেরে (পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি থেকে) তবে তাতে শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা এই সমস্যার কূটনৈতিক সমাধান করতেই পছন্দ করবো। কিন্তু বিষয়টাকে পিয়ংইয়ংই জটিল করে তুলছে।
উত্তর কোরিয়াকে ‘প্রশমিত’ করতে চীনের উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি মনে করেন, বেইজিংয়ের এই সহায়তা কোরীয় উপদ্বীপ ঘেঁষে উত্তেজনাকে দ্রুত প্রশমিত করবে।
ক’ সপ্তাহ আগে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক পরীক্ষার প্রস্তুতির খবরে প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিমে যুদ্ধবিমানবাহী রণতরী কার্ল ভিনসনের নেতৃত্বে বেশ কিছু যুদ্ধজাহাজ, ডেস্ট্রয়ার ও সাবমেরিন পাঠায় মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদরদফতর পেন্টাগন। ওই রণতরীতে শতাধিক যুদ্ধবিমান রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তাদের অবস্থান নেওয়ার পর থেকে পিয়ংইয়ং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে তুমুল বাকযুদ্ধ চলছে। এরইমধ্যে ব্যাপক সমরাস্ত্র প্রদর্শন করেছে উত্তর কোরিয়াও। এমনকি উত্তেজনার মধ্যেই একটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার চেষ্টা চালায় তারা।
এমন উত্তেজনা চলতে থাকার মধ্যে পেন্টাগনের তরফ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, যদি আঞ্চলিক প্রভাবশালী চীন সংকটের সমাধানে এগিয়ে না আসে তবে মার্কিন সামরিক বাহিনী একলাই সিদ্ধান্ত নেবে। তাদের এই হুঁশিয়ারিতে রাশিয়া পাল্টা সতর্কতা দিয়ে বলে দেয়, যুক্তরাষ্ট্র যেন একতরফা কোনো হামলা না চালায় উত্তর কোরিয়ার ওপর।
তার জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পিয়ংইয়ংকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক বিলাসিতা ইস্যুতে ওয়াশিংটনের ‘কৌশলগত ধৈর্য্য’ দেখানোর সময় শেষ হয়েছে। এবার এই বিষয়টির সুরাহা হবে। তার ‘সুরাহা’র হুমকির জবাবে পিয়ংইয়ং একটি সংবাদমাধ্যমে সম্পাদকীয় লিখে মার্কিন রণতরী ডুবিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়ার পর ট্রাম্প পাল্টা এই সাক্ষাৎকার দিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৭
এইচএ/