তাই তো নির্বাচনে ভোটাররা বেছে নিলেন অঁ মার্শ দলের ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে। ৩৯ বছর বয়সী মধ্যপন্থি ম্যাক্রোঁ পরাজিত করেন ৪৮ বছর বয়সী কট্টর-ডানপন্থি ল্য পেনকে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হয়েছিল। তবে দ্বিতীয় দফায় এসে প্রতিদ্বন্দ্বীকে বড় ব্যবধানেই হারালেন তিনি। এতে করে দেশটির সবচেয়ে কম বয়সী প্রেসিডেন্টও বনে গেলেন মিস্টার ম্যাক্রোঁ।
রোববার (০৭ মে) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। এরপরই ফল গণনায় দেখা যায়, ম্যাক্রোঁ পেয়েছেন প্রায় ৬৫ দশমিক ০৬ শতাংশ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ন্যাশনাল ফ্রন্টের মারিন ল্য পেন পেয়েছেন ৩৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
এর আগের সংবাদ: ম্যাক্রোঁ নাকি ল্য পেন, কে আসছেন ফ্রান্সের নেতৃত্বে?
জনগণের রায় পরিষ্কার হওয়ার পর পরাজয় স্বীকার করে নেন পেন। সংবাদমাধ্যমে জানান, ম্যাক্রোঁর দলই এখন দেশের প্রধান শক্তি। তাদের হাত ধরে দেশ এগিয়ে যাবে এটাই প্রত্যাশা।
পেনসহ বিভিন্ন দেশের নেতারা ইতোমধ্যে অভিনন্দন জানিয়েছেন ম্যাক্রোঁকে।
জয়ের পরপর সংবাদ সম্মেলন করে ‘নয়া নাবিক’ বলেন, দেশের সুদীর্ঘ ইতিহাসে আজ থেকে নতুন অধ্যায়ের শুরু। আমার প্রধান দায়িত্ব হবে ভয়ডর দূর করে জনমনে আশাবাদ জাগানো এবং নতুনভাবে পথচলা।
গত ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রথম পর্বের ভোট। সেখানে লড়েছিলেন ১১ প্রার্থী। তাদের মধ্যে কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় লড়াই গড়ায় রানঅফে। এদিকে নির্বাচনে লড়াইয়ের সুযোগ ছিল অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদেরও। কিন্তু নিজের সমর্থনের পাল্লা কম বলে তিনি নির্বাচন না করার ঘোষণা দেন।
রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ফ্রান্সজুড়ে চূড়ান্ত পর্বের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এই ভোট চলে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। কিছু শহরে হয় রাত ৮টা পর্যন্তও।
প্রস্তাব-বিতর্কসহ নানা ক্ষেত্রে নিজের যোগ্যতা দেখিয়ে জনমত জরিপে আগে থেকেই এগিয়ে ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউপন্থি ব্যবসাবান্ধব প্রার্থী ম্যাক্রোঁ। প্রথম পর্বের ভোটের পর ইউরো মুদ্রা ও কট্টর অভিবাসনবিরোধী ল্য পেনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া না গেলেও গত সপ্তাহের চূড়ান্ত বিতর্কের পর তিনি বেশ পিছিয়েই পড়েছিলেন, যার রেশ পাওয়া গেলো চূড়ান্ত ফলেও।
ম্যাক্রোঁ নিজেকে ‘সুরক্ষিত ইউরোপে শক্তিশালী ফ্রান্সের পক্ষের প্রার্থী’ হিসেবে প্রচার করেছেন। আর ল্য পেন প্রার্থিতায় স্লোগান দেন ‘ফ্রান্সে শৃঙ্খলা ফেরানো এবং ফ্রান্সকেই বেছে নেওয়ার এখনই সময়’ বলে।
ম্যাক্রোঁ বাম-ডান বিভাজনের মধ্যে সেতুবন্ধন হয়ে দেশজুড়ে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার হুজুগ থামাতে চান। তার মতে, এই প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার হুজুগেই আমেরিকানরা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভোট দিয়েছে, ইইউ ছেড়েছে ব্রিটিশরা।
অঁ মার্শের প্রার্থী ম্যাক্রোঁর উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- ইউরোজোনের নিজস্ব পার্লামেন্ট, বাজেট ও অর্থমন্ত্রী থাকবে; সামাজিক নিরাপত্তা কর বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা ও বেকার ভাতায় কাটছাঁট করা।
আপাতদৃষ্টে বলাই যায়, তার এই জয়ে ফ্রান্সকে হারানোর শঙ্কায় পড়বে না ইইউ। দুর্বল মুদ্রা হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়বে না ইউরোও।
বাংলাদেশ সময়: ০১৩৬ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৭/আপডেট ০৮১৬ ঘণ্টা
বিএসকে/আইএ