ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

জাতিসংঘে মাহমুদ আব্বাসের ঐতিহাসিক ভাষণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১১
জাতিসংঘে মাহমুদ আব্বাসের ঐতিহাসিক ভাষণ

নিউইয়র্ক: ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ৬৩ বছরের ইসরায়েলি দখলদারিত্বের অবসান এবং তার দেশের স্বাধীনতার স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছেন।

শুক্রবার মুহুর্মুহু করতালির মধ্যে দেওয়া এই আবেগময় ভাষণে মাহমুদ আব্বাস বলেন, ‘যথেষ্ট...যথেষ্ট...যথেষ্ট... হয়েছে।

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বাধীনতা স্বীকৃতি দেওয়ার এটাই উপযুক্ত সময়। আর অপেক্ষা নয়, আর দখলদারিত্ব নয়, আর দুর্ভোগ নয়। আমাদের একটাই লক্ষ্য স্বাধীনতার স্বীকৃতি। আমাদের একটাই চাওয়া জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্যপদ প্রাপ্তি। ’

জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের কাছে স্থায়ী সদস্যপদ চেয়ে আবেদন করার কয়েক ঘণ্টা পর এই ঐতিহাসিক ভাষণটি দিলেন মাহমুদ আব্বাস।

ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগের হুমকিকে উপেক্ষা করে ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে তাদের ন্যায্য দাবিকে তুলে ধরলেন তিনি।

মাহমুদ আব্বাসের ঐতিহাসিক আবেগদৃপ্ত ভাষণটি প্রদানের পরপরই হাজার হাজার ফিলিস্তিনি উল্লাসে ফেটে পড়ে। তারা ড্রাম বাজিয়ে, বুকে স্বদেশের পতাকা জড়িয়ে দলে দলে রাস্তায় নেমে আসে। সমগ্র ফিলিস্তিন জুড়ে শুরু হয় অভূতপূর্ব এক আনন্দঘন উল্লাসের।

মাহমুদ আব্বাসের ভাষণের পরপরই ভাষণ দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি তার ভাষণের শুরুতেই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বাধীনতা স্বীকৃতিদানের বিরোধীতা করেন। নেতানিয়াহু বলেন,‘ফিলিস্তিনিদের উচিত স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পাওয়ার আগে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি স্থাপন করা। ইসরায়েলের নিরাপত্তা পূর্ণ নিশ্চয়তার আগে জাতিসংঘের উচিত হবে না ফিলিস্তিনিকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়া। ’ নেতানিয়াহু আরো বলেন, ‘জাতিসংঘ সনদের মধ্যদিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে না। শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায় আলোচনা। ’

জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন যতদ্রুত সম্ভব নিরাপত্তা পরিষদের কাছে মাহমুদ আব্বাসের স্বাধীন রাষ্ট্রের সৃষ্টি দাবিটি পেশ করবেন। এই দাবির উপর নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটি হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু আগেই এর বিরুদ্ধে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগের হুমকি দিয়ে রেখেছে সেকারণে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার স্বীকৃতি প্রাপ্তির আশা খুবই ক্ষীণ।

এর আগে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির দাবিতে জাতিসংঘে প্রস্তাব পেশ করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।

শুক্রবার তিনি জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়ার দাবিতে একটি চিঠি হস্তান্তর করেন।

ফিলিস্তিনের উদ্যোগের ব্যাপারে তার মুখপাত্র বলেছেন, এই পদক্ষেপে ইসরায়েল আক্ষেপ প্রকাশ করেছে।

অবশ্য আগে থেকেই ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছে। আলোচনার মাধ্যমেই ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে তারা দাবি করছে।

জাতিসংঘে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির দাবির প্রক্রিয়াটি শুক্রবার শুরু হয় জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের কাছে একটি লিখিত অনুরোধ জানানোর মধ্য দিয়ে।


বাংলাদেশ সময়: ০২৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।