ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ক্যান্সার চিকিৎসার ব্যয় বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১১
ক্যান্সার চিকিৎসার ব্যয় বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে

ঢাকা: পশ্চিমের উন্নত দেশগুলোতে ক্যান্সার চিকিৎসার ব্যয় বাড়ছে হু হু করে। ব্যয় বৃদ্ধির এই প্রবণতা এখন রীতিমত একটা মহাসঙ্কটের দিকে যাচ্ছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন গবেষকরা।



ল্যানচেট অনকোলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, উন্নত দেশগুলোতে ক্যান্সার চিকিৎসার খরচ এবং প্রযুক্তির মূল্য যথেষ্ট প্রমাণ ছাড়াই অত্যধিক বাড়িয়ে দেখানোর একটা সংস্কৃতি চালু হয়েছে। সেই সঙ্গে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা ও চিকিৎসা খরচ সমানে বাড়ছে।

জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে প্রতিবছর এক কোটি ২০ লাখ মানুষের ক্যান্সার রোগ ধরা পড়ে। এই হার ২০৩০ সাল নাগাদ ২ কোটি ৭০ লাখে গিয়ে দাঁড়াবে। এতোগুলো রোগীর জন্য চিকিৎসা খরচ ধরা হয়েছে আনুমানিক ২৮ হাজার ৬শ কোটি মার্কিন ডলার।

বিশ্বজুড়ে ৩৭ জন বিশেষজ্ঞের একটি দল বলেছে, ক্যান্সার সমস্যাটি দিন দিন বাড়ছে এবং এটা শেষ পর্যন্ত অর্থনীতির একটা বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তারা আরও বলছেন, বেশিরভাগ উন্নত দেশ তাদের স্বাস্থ্যসুরক্ষা খাতে ক্যান্সারের পেছনে বরাদ্দ রাখে এ খাতে মোট বাজেটের ৪-৭ শতাংশ।

ক্যান্সার সমস্যাটি যে হারে বাড়ছে তাতে ইতোমধ্যেই বিষয়টি অর্থনীতিবিদ ও নীতি নির্ধারকদের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রমাণ হিসেবে; ব্রিটেনে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় মোট খরচ গত চার বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেড়েছে।

তবে সাধারণত দেখা যায়, নতুন ওষুধ ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যসুরক্ষা খাতে খরচও বাড়তে থাকে। রোগীদের ভাল সেবা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই খরচ বাড়ানো হয়। কিন্তু ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ঘটনাটা ঘটছে উল্টো।

উদাহরণ স্বরূপ, ব্রিটেনে ১৯৭০ এর দশকে ক্যান্সারের ওষুধ ৩৫টি থেকে বেড়ে হয়েছে একশ’র কাছাকাছি। বাস্তব অবস্থা দেখে বুঝা যাচ্ছে, এতে খরচ বাড়বে মাত্রাতিরিক্তি।

তবে গবেষকদের অভিযোগ শুধু ওষুধের মূল্য নিয়ে নয়। ক্লিনিকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায়ও প্রচুর অর্থ খরচ হয়। অথচ ওই সব পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তার যথেষ্ট প্রমাণ নেই।

আরও অভিযোগ আছে, চিকিৎসা ও প্রযুক্তির ব্যবহারের বাড়াবাড়ি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রোগীর সমস্যা নির্ধারণের জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্ক্যান করার চেয়ে রোগের অতীত ইতিহাস এবং শারীরিক পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা চিকিৎসকদের জন্য অনেক সহজ।

আবার নিষ্ফল চিকিৎসা দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। ক্যান্সার রোগীর সর্বশেষ কয়েক সপ্তাহে ক্যামোথেরাপি আসলে কোন কাজে আসে না। কিন্তু প্রায়ই তা দেওয়া হয়। অথচ এই চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

এ প্রসঙ্গে ওই গবেষকদলের প্রধান অধ্যাপক সুলিভান বলেন, ‘আমরা আছি ব্যয়ের এক অসম্ভব বঙ্কিমপথে। এই মুহূর্তে এই ব্যয় কমাতে হবে নতুবা তা আরও বাড়বে। এতে করে গরীব, ধনীর মধ্যে ব্যবধান আরও বাড়বে। ’

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।