রাখাইনে দেশটির মুসলিম জনগোষ্ঠীর (রোহিঙ্গা) ওপর নির্যাতনের কারণে বৈশ্বিকভাবে নানা সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছেন শান্তিতে নোবেল নোবেল জয়ী সু চি।
এ সঙ্কট চলাকালেই বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সু চির মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সু চি’র রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘২০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় যোগ দেবেন না অং সান সু চি’।
সু চির আনুষ্ঠানিক পদবী উল্লেখ করে একই কথা জানিয়েছেন মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জাও হাতাই বলেছেন, ‘রাষ্ট্রীয় পরামর্শদাতা জাতিসংঘের আসন্ন সাধারণ পরিষদের সভায় যোগ দেবেন না। ’
তবে সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিস্তারিত না বললেও দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হেনরি ভান থিও ওই সভায় যোগ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
নিজ দল এনএলডি ক্ষমতায় আসার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রথমবারের মতো অংশ নেন সু চি। অধিবেশনে সু চির দেওয়া ভাষণ বেশ প্রশংসিত হয়।
আর এবার এমন এক সময় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরু হয়েছে, যখন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংস দমন-পীড়ন চালাচ্ছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীসহ স্থানীয় লোকজন।
এদিকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। রাখাইনে নির্যাতনে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের সংখ্যা ৩ লাখ ৭০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে ধারণা করছেন জাতিসংঘ কর্মকর্তারা। আলোচনায় এ বিষয়টিও উঠে আসবে বলে খবরে বলা হয়েছে।
রাখাইন পরিস্থিতির কারণে জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের চলতি অধিবেশনে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছে মিয়ানমার।
সোমবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান জাইদ রা’দ আল হুসেইন মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ওপর ‘নিয়মানুবর্তিত আক্রমণ’ চালানোর জন্য মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
একই সঙ্গে দেশটিকে সতর্ক করে ‘জাতিগত নির্মূল’ অভিযান বন্ধের আহ্বান জানান। আর এরপরই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে সু চির না যাওয়ার ঘোষণা এলো।
একই সঙ্গে জাতিগত নিধনের অভিযোগ অস্বীকার করার পাশাপাশি জেইদের মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে মিয়ানমার।
গত ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়ি ও তল্লাশিচৌকিতে সন্ত্রাসী হামলা হয়। এর জের ধরে সেখানে নতুন করে সহিংস সেনা অভিযান শুরু হয়। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। নির্মম নির্যাতনের পাশাপাশি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়িও।
এ অবস্থায় নীরব ভূমিকার জন্যে বিশ্বব্যাপী সমালোচিত হচ্ছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি। এমনকি তার অবস্থানের সমালোচনা করেছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী একাধিক ব্যক্তিও। রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে মুখ খুলতে আহ্বান জানিয়েছেন নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭/আপডেট: ১৩১০ ঘণ্টা
এসএইচ/এমএ