সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) তদন্ত রিপোর্টটি প্রকাশ করে স্টেট ডিপার্টমেন্ট। রিপোর্টটি তৈরিতে প্রায় এক হাজার রোহিঙ্গার সাক্ষাত্কার নেওয়া হয়।
২০ পৃষ্ঠার ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে সংঘটিত সহিংসতার আকার ছিল অত্যন্ত ব্যাপক ও বিস্তৃত, যা সেখানকার রোহিঙ্গা বাসিন্দাদের ভীত করে তোলে এবং পালিয়ে যেতে বাধ্য করে। সেনাবাহিনীর এ অভিযানের আওতা ও ব্যাপকতা ইঙ্গিত করে অভিযানটি ছিল সু-পরিকল্পিত ও সু-সমন্বিত।
রিপোর্টে প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় সেনাবাহিনীর দ্বারা শিশু হত্যা, নিরস্ত্র মানুষদের ওপর গুলিবর্ষণ, ভুক্তভোগীদের জীবিত কবর দেওয়া বা গণকবরে ছুড়ে ফেলা, এমনকি জনসম্মুখে নারীদের শ্লীলতাহানির মতো নৃশংসতার ঘটনা উঠে আসে। এছাড়াও চারজন রোহিঙ্গা নারীকে অপহরণের পর বেঁধে তিন দিন ধরে ধর্ষণের পর অর্ধমৃত অবস্থায় ফেলে আসার ঘটনা পাওয়া যায় একজন প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায়।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর হিসেব মতে রাখাইনে মৃতের সংখ্যা কয়েক হাজার।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের দিনই নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বক্তব্যে মাতৃভূমিতে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও সম্মানের সঙ্গে ফেরত নেওয়া, তাদের বিপক্ষে বৈষম্যমূলক আইন, নীতি ও পদ্ধতি বাতিল করা এবং মিয়ানমারকে জবাবদিহিতা ও বিচারের আওতায় আনার ব্যাপারে সুপারিশ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরও জোরদার করার জন্য আহবান জানানো হয়েছে। মিয়ানমারে মানবতাবিরোধী অপরাধ বা গণহত্যার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্যও সুপারিশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চালানো ব্যাপক সহিংসতার মুখে জীবন বাঁচাতে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। দেশটির সেনাবাহিনীর এ কর্মকাণ্ডকে জাতিগত নিধণ বলে আখ্যা দেয় বিভিন্ন রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংগঠন। এদিকে গণহত্যা প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত সেনাসদস্যদের শাস্তির আওতায় আনার পক্ষে জাতিসংঘসহ মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৫, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৮
টিএম/আরএ/এনএইচটি