ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান ইন্দোনেশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানায়, দেশটির মধ্যাঞ্চলের সুলাওয়েসি দ্বীপে ভয়াবহ এ ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৩২ জনে। এরমধ্যে কেবল পালু শহরেই প্রাণ হারিয়েছেন ৮২১ জন এবং ডংগলাতে নিহত হয়েছেন ১১ জন।
গত শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ভূমিকম্প আঘাত হানার দু’দিন পর রোববারও (৩০ সেপ্টেম্বর) উদ্ধারকারী দলকে কার্যক্রমে বেগ পেতে হচ্ছে। বিশেষ করে দুর্গম অঞ্চলগুলোতে সহসা পৌঁছানো যাচ্ছে না।
এর আগে শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুরে সুলাওয়েসি দ্বীপের পালু শহরের কাছে ধারাবাহিক ভূমিকম্পের পর ৭ দশমিক ৫ মাত্রার শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে জারি করা হয় সুনামি সর্তকতা। পরবর্তীতে ওই অঞ্চলে প্রায় সাড়ে ছয় ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস আছড়ে পড়ে।
খবরে বলা হয়, পালু শহরের দু’টি হোটেল ও একটি শপিংমলে অনেক মানুষ পুরনো ভাঙাচোরা ইট ও পাথরের নিচে আটকে পড়েছেন। শহরের রোয়া রোয়া নামের একটি হোটেলের ধ্বংসস্তুপ থেকে এক নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ওই হোটেল মালিক কো জেফরি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আনুমানিক ৬০ জন ব্যক্তি হোটেলের নিচে আটকে পড়েছেন।
ইউসুফ নামের এক উদ্ধারকারী জানান, নিখোঁজ ব্যক্তিদের আত্মীয়দের কাছে জানতে পেরেছি অনেকেই হোটেলের নিচে আটকে পড়েছে। ফলে আমরা এটাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছি এবং উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছি।
দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট জুসুফ কাল্লা সতর্ক করে বলেছেন, নিহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া ও ভূতাত্ত্বিক সংস্থার প্রধান জানান, পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। বিভিন্ন ভবন ধসে পড়েছে এবং মানুষ রাস্তায় ছোটাছুটি করছে। একটি জাহাজ ডাঙায় ভেসে এসেছে।
ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্প প্রবণ দেশ। গত জুলাই ও আগস্টে পালু শহর থেকে শত কিলোমিটার দূরের লমবোক দ্বীপে দফায় দফায় ভূমিকম্পে ৫০০ লোকের প্রাণহানি হয়। প্রশান্ত মহাসাগরের ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা ‘রিং অব ফায়ারে’ অবস্থিত দেশটিতে ২০০৪ সালে ৯.৩ মাত্রার ভূমিকম্পের পর ইন্দোনেশিয়াসহ আশেপাশের কয়েকটি ভয়াবহ সুনামি আছড়ে পড়ে। এতে প্রায় দুইলাখেরও বেশি মানুষ নিহত হন, যার মধ্যে প্রায় সোয়া লাখই ইন্দোনেশিয়ার।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৮
এএইচ/এইচএ/