মঙ্গলবার (১২ মার্চ) মার্কিন অ্যাভিয়েশন রেগুলেটর জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে ‘বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স-৮’ মডেলের প্লেন গ্রাউন্ড করা হবে না।
ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের বিধ্বস্ত হওয়া প্লেনটির ফ্লাইটের তথ্য এবং ককপিটের ভয়েজ রেকর্ড পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ওয়াশিংটন কিংবা লন্ডনে পাঠানো হবে কি-না- এ নিয়ে ইতোমধ্যে বৈঠক করেছেন ইথিওপিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাভিয়েশন সেফটির কর্মকর্তারা।
এ ব্যাপারে মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, প্লেন বিধ্বস্ত হওয়ায় ডিভাইসগুলো বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডিভাইসগুলোতে থাকা তথ্য উদ্ধার করা যাবে বলে জানিয়েছেন তারা।
যেহেতু প্লেনটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে মডেলটির ব্যবহার বন্ধ রাখতে শুরু করেছে বিশ্বের অনেক দেশ, তাই শিগগির দুর্ঘটনার কারণ জানতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিশ্বব্যাপী ৩৭১টি ‘বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স-৮’ মডেলের প্লেন রয়েছে। তবে দুর্ঘটনাটির জেরে বর্তমানে দুই-তৃতীয়াংশই বন্ধ রয়েছে।
তবে উদ্ধার করা তথ্য নিরীক্ষণের জন্য পঠানো হবে কি-না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। এসব ব্যাপারে কোনো ধরনের মন্তব্য করেনি মার্কিন ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)।
এফএএ’র ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক ড্যান এলওয়েল বলেছেন, প্রাথমিক পর্যালোচনায় প্লেনটি বিধ্বস্ত হওয়ার পেছনে স্বাভাবিক কার্যক্রমের কোনো ধরনের ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়নি। তাই এটি বন্ধের কোনো কারণ দেখছি না।
অন্যদিকে, মডেলটির নিরাপত্তার ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বোয়িংয়ের প্রধান কার্যনির্বাহী ডেনিস মুইলেনবার্গের সঙ্গে কথা বলেছেন। তখন এ মডেলেন প্লেনটি নিরাপদ এবং এটি বন্ধ রাখার প্রয়োজন নেই বলেই জানিয়েছেন ডেনিস।
যুক্তরাষ্ট্রে সাউথ-ওয়েস্ট এয়ারলাইন্স কো, আমেরিকান এয়ারলাইন্স ইনক এবং ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স ‘বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স’ মডেলের প্লেন ব্যবহার করে। বোয়িংয়ের এ দুঃসময়ে তারা কোম্পানিটির পাশেই রয়েছে বলে জানিয়েছে। তবে এ মডেলের প্লেনে চড়তে যাত্রীদের মধ্যে রয়েছে উদ্বেগ।
রোববার (১০ মার্চ) সকালে ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবার বোলে বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট ‘ইটি৩০২’ উড্ডয়ন করার ছয় মিনিটের মধ্যেই ৮টা ৪৪ মিনিটের দিকে বিধ্বস্ত হয়। এতে ফ্লাইটের ১৫৭ আরোহী নিহত হন। গত বছরের অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়ায় বিধ্বস্ত লায়ন এয়ারের প্লেনটিও একই মডেলের ছিল। ওই দুর্ঘটনায় ১৮৯ আরোহীর মৃত্যু হয়।
পাঁচ মাসেরও কম সময়ের মধ্যে এ মডেলের দু’টি প্লেন বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় সমালোচনার মুখে রয়েছে এটির উৎপাদনকারী কোম্পানি বোয়িং। এ দুই ঘটনার মধ্যে যোগসাজশও দেখছে অনেকে। তবে ঘটনা দু’টির মধ্যে কোনো ধরনের যোগসাজশ নেই বলে দাবি বোয়িংয়ের।
ইথিওপিয়া, চীন, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, উত্তর কোরিয়া, ভারত ও যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বেশ কয়েক দেশই বর্তমানে ‘বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স-৮’ এর ওঠা-নামা বন্ধ রেখেছে। তবে অনেক এয়ারলাইন্স তাদের বহরে থাকা মডেলটির প্লেনে এখনও আস্থা রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
অন্যদিকে, বোয়িংকে এ মডেলের প্লেন আরও উন্নয়ন করার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৯
এসএ/টিএ